‘বিদ্রোহী’ জয়প্রকাশ মজুমদার, রীতেশ তিওয়ারির পাশেই দাঁড়ালেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। অন্য কোনও দলের সাংসদ নয়, নিজের দলের সাংসদের বাড়িতে গিয়ে কথা বললে তাতে দোষের কী আছে প্রশ্ন শান্তনুর। একইসঙ্গে তিনি বলেন, সবকিছু নিয়েই দিল্লিতে তিনি কথা বলবেন। সংসদের বাজেট অধিবেশনে যোগ দিতে রবিবারই দিল্লি রওনা দেন বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। তার আগে দমদম বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে শান্তনু বলেন, “এখন বাজেট অধিবেশনে যাচ্ছি। বৈঠক তো সকলের সঙ্গেই হবেই। কথা তো বলবই। যা যা আছে সব নিয়ে কথা হবে।” শনিবারই শান্তনু ঠাকুরের ঠাকুরনগরের বাড়িতে দেখা গিয়েছে বিজেপি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত দুই নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারিকে।
বৈঠক সেরে বেরিয়ে জয়প্রকাশ মজুমদাররা বলেছিলেন, মন্ত্রী দিল্লি যাওয়ার আগে দেখা করতে এসেছিলেন। রবিবার বিমানবন্দরের বাইরে শান্তনু ঠাকুরও বলেন, “এনারা কোথায় যাবেন? ৩০ বছর ধরে এনারা দলটা করেন। হঠাৎ করে দল থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। কোথায় যাবেন? তৃণমূল, সিপিএম বা কংগ্রেসে গিয়ে তো বসেননি। বসেছেন তো ভারতীয় জনতা পার্টির মন্ত্রীর বাড়িতেই। এতে অসুবিধার কী আছে?”
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “শান্তনু ঠাকুর আমাদের দলের অন্যতম বিশিষ্ট নেতা। উনি মন্ত্রীও। কয়েকদিন আগে ওনার সঙ্গে আমার ফোনেও কথা হয়েছে। অন্য বিধায়করাও ওনার কাছে যেতেই পারেন। তাতেও কোনও অসুবিধা নেই। উনিও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে ওনার সমস্যার কথা বলতে পারেন। সমস্যা আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান সম্ভব। আমাদের বিশ্বাস খুব তাড়াতাড়ি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আমার সঙ্গে ওনার ফোনে কথা হয়েছে। দরকার পড়লে ওখানেও কথা হবে। লোকসভায় তো দেখা হয়ই আমাদের। যদি মনে হয় দফতরে গিয়ে বা মন্ত্রালয়ে গিয়েও দেখা হতে পারে। যদি প্রয়োজন হয়। আমি আগেও বলেছি, মতবিরোধ আছে, মনবিরোধ নেই। রাজনৈতিক দলে মতবিরোধ থাকা খুব স্বাভাবিক। অস্বাভাবিক কিছু নয়।”
এ প্রসঙ্গে সুকান্তের সংযোজন, “যখন স্বাধীনতা সংগ্রামের মতো মহৎ আন্দোলন চলছিল, সেই সময় যদি গান্ধীজি এবং নেতাজির মতো মহান ব্যক্তির মধ্যে মতবিরোধ হতে পারে। তা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের মধ্যে তো মতবিরোধ হওয়া খুব স্বাভাবিক। রাজনীতিতে মতবিরোধটা খুব স্বাভাবিক বিষয়। তৃণমূল কংগ্রেসে ভাইপো-পিসির মধ্যে মতবিরোধ হয়ে যাচ্ছে। একই পরিবারের। আমাদের মধ্যে তো রক্তের সম্পর্ক নেই। মতবিরোধ আছে, মনবিরোধ নেই।”
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক বিজেপির সঙ্গেই আছে। সারা বাংলার মতুয়া সমাজ আমাদের বারবার ভোট দিয়েছেন। বিজেপি সকলকে নিয়ে সার্বিক সমন্বয় রেখে চলে। সকলেই তাই দলের সঙ্গে আছেন। এক আধজন নেতা ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে বলেছেন। সে কথা বলার অধিকার রয়েছে গণতন্ত্রে। তা দলের কোনও সমস্যা নয়। আর যে কোনও নেতার সঙ্গে যে কেউ দেখা করতে পারেন। তাতে আপত্তির কিছু নেই।”
Be the first to comment