শিবপুর টাকা উদ্ধার কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য। লোক ঠকানোর কারবারের জন্য খোলা হয়েছিল আইএক্স গ্লোবাল অ্যাপ। অ্যাপের মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচা কীভাবে হয়? তা নিয়ে ট্রেনিং দেওয়ার জন্য খোলা হয়েছিল এই বিশেষ অ্যাপ।কীভাবে কাজ করত এই অ্যাপ? জানা গিয়েছে, এই অ্যাপে ন্যূনতম অঙ্কের টাকা দিয়ে বিদেশি মুদ্রা কেনা-বেচার প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। ১২৫ ডলার দিতে হত অ্যাপের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের জন্য। পাশাপাশি, চেন সিস্টেমের মাধ্যমে আরও লোক আনতে বলা হত। যত বেশি লোক আনবে, তত বেশি কমিশন। আর তারপর টাকার অঙ্ক অনেকটা বেড়ে গেলে সেই ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়া হত।
আইএক্স গ্লোবাল নামে এই অ্যাপটির মাধ্যমে বিভিন্ন স্কিমের প্রলোভন দেখানো হত বলে অভিযোগ। মূলত বিদেশি মুদ্রা কেনা-বেচার প্রশিক্ষণের স্কিম। পরে বলা হত, ট্রেনিংয়ের জন্য আরও লোক আনতে। লোক আনলেই মিলবে কমিশন। প্রথম দিকে অনেকে সেই কমিশন পেতেনও। তারপর প্রশিক্ষণের জন্য বিনিয়োগের অঙ্ক বেড়ে গেলে, ব্লক করে দেওয়া হত অ্যাকাউন্ট।
এই নিয়ে প্রথম অভিযোগ জমা পড়েছিল চলতি বছরের অগস্ট মাসে। অভিযোগ জানিয়েছিল একটি রাষ্টায়ত্ত ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ১৬, স্ট্র্যান্ড রোডের ঠিকানা দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। দুটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল অগস্টে। টিপি গ্লোবাল এফেক্টসের নামেই খোলা হয়েছিল অ্যাকাউন্ট। অ্যাকাউন্ট খোলার সময় উল্লেখ করা হয়েছি খাদ্যশস্যের ব্যবসার বলে। একটি অ্যাকাউন্টের রেসিডেনশিয়াল অ্যাড্রেস দেখানো হয়েছিল ঝাড়খণ্ডে। জামশেদপুরের বাসিন্দা বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দেখা যায় বিশাল অঙ্কের আর্থিক লেনদেন হয়েছে ওই অ্যাকাউন্টে। এক মাসে প্রায় ৭৭ কোটি টাকার লেনদেন। মূলত বিদেশি মুদ্রার লেনদেন। সন্দেহ হয় আরবিআই-এর।
এদিকে আরবিআই-এর থেকে সন্দেহ হওয়ায় ৩৪ টি অ্যাকাউন্টকে ব্ল্যাকলিস্টেড করে দেওয়া হয়। সেই তালিকায় ছিল এই এই টিপি গ্লোবাল এফেক্টস সংস্থাও। প্রথমে দেখা যায়, এই দুটি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তিনটি অ্যাকাউন্টে যাচ্ছিল। তারপর দেখা যায় ৯টি অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছিল। এদিকে ব্যাঙ্কের তরফে লালবাজারকে জানানো হয় বিষয়টি। পুলিশ সেই সূত্র ধরে ১৬, স্ট্র্যান্ড রোডের ঠিকানায় যায়। সেখানে একজনকে পাওয়া যায় এবং তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসে শৈলেশ পান্ডের নাম। জানা যায়, এর মূল পাণ্ডা শৈলেশ।
Be the first to comment