তৃণমূলের সঙ্গে কি তাঁর সম্পর্কে শেষ পর্যন্ত যবনিকা পড়তে চলেছে? মঙ্গলবার প্রশান্ত কিশোরের দুই প্রতিনিধি তাঁর সঙ্গে ব্যারাকপুরে এসে কথা বললেও, শীলভদ্র স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, তৃণমূলের হয়ে আর ভোটে দাঁড়াবেন না। আর বুধবার বিকেলে গেরুয়া রঙের উপরে ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখলেন, ‘বন্ধু দেখা হবে…’
স্বাভাবিক কারণেই শীলভদ্রের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে আরও একবার জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে। যদিও ব্যারাকপুরের বিধায়ক এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘পুরোনো বন্ধুদের বিষয়ে এমনটা লিখেছি।’ আর গেরুয়া রং? শীলভদ্রের ব্যাখ্যা, ‘গেরুয়া রং তো জাতীয় পতাকাতেও রয়েছে।’ যদিও তৃণমূল বিধায়কের এই যুক্তিতে জল্পনা থেমে থাকছে না।
উল্লেখ্য, ২০১১ থেকে ২০২০- ব্যারাকপুর কেন্দ্র থেকে পরপর দু’বারের তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র। সামলেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় দলের যুব সভাপতির পদ। সুবক্তা শীলভদ্র পরিচিত ছিলেন মুকুলপন্থী হিসেবেই। কিন্তু মুকুল রায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় বেশ খানিকটা ব্যাকফুটে চলে যান শীলভদ্র।
সোমবারের পর মঙ্গলবারও পিকের টিমের দুই প্রতিনিধি বিধায়কের ব্যারাকপুরের অফিসে হাজির হন। মিনিট সাতেক কথা হয় তাঁদের। কিন্তু শীলভদ্রের মান ভাঙার কোনও আভাসই পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবারও বিধায়ক জানান, তৃণমূলের হয়ে ভোটে না-দাঁড়ানোর যে সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন, সেখান থেকে পিছিয়ে আসার কোনও প্রশ্নই নেই। এখানে লক্ষ্যণীয়, শীলভদ্র তৃণমূলের হয়ে ভোটে না-দাঁড়ানোর কথা বললেও, অন্য কোনও দল থেকে লড়বেন কি না, সেই অবস্থান স্পষ্ট করেননি।
তাল কাটে গত ১ নভেম্বর। ব্যারাকপুরে দলীয় কর্মীদের নিয়ে বিজয়া সম্মিলনীতে হাজির হয়ে আচমকা তিনি জানিয়ে দেন, তৃণমূলের হয়ে আর ব্যারাকপুর থেকে ভোটে দাঁড়াবেন না। ওই দিন প্রশান্ত কিশোরের টিমের বিরুদ্ধেও বিষোদ্গার করতে শোনা যায় তাঁকে।
শীলভদ্র বলেন, বাংলার রাজনীতি ডিজিটাল পথে হয় না। এখানে ইমোশন দিয়ে রাজনীতি হয়। একটা বাজারি কোম্পানি, যারা পয়সা নিয়ে বাইরের রাজ্য থেকে এসে ভোটের কাজ করতে চায়, তারা এসে আমাকে রাজনৈতিক জ্ঞান দিচ্ছে! এটা আমার কাছে দুর্ভাগ্যের।
পিকের টিমের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আসরে নামেন জেলা তৃণমূল সভাপতি ও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। শীলভদ্রর মান ভাঙাতে তাঁর সোদপুরের বাড়িতে দেখা করতে যান মন্ত্রী। কিন্তু শীলভদ্র সে সময় বাড়িতে ছিলেন না। জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘সোদপুর দিয়ে যাওয়ার সময় ওর শরীর-স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে গিয়েছিলাম। দেখা হয়নি, তবে ফোনে কথা হয়েছে। পরে দেখা করে ওর সঙ্গে কথা বলে নেব।’ যদিও শীলভদ্রের এদিনের পোস্টের পর জল্পনা আরও বাড়ল।
Be the first to comment