পাক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইমরান খানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার ও বর্তমান কংগ্রেস নেতা নভজ্যোৎ সিং সিধু। আর সেখানে গিয়েই সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ সবার বিরাগভাজন হলেন তিনি। এমনকী তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হলো মামলাও।
১৮ অগস্ট বন্ধু ইমরান খানের শপথ গ্রহণে দেখা যায় সিধুকে। সেখানে গিয়ে পাক সেনা প্রধান জেনারেল বাজওয়াকে জড়িয়ে ধরেন সিধু। এমনকী শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে একেবারে সামনের সারিতে পাক রাষ্ট্রপতির পাশেই বসতে দেখা যায় তাঁকে। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের ভারতের প্রাক্তন এই ক্রিকেটার জানান, তিনি আশাবাদী ইমরানের হাত ধরেই ভারত-পাক নতুন সম্পর্কের সূচনা হবে।
কিন্তু তাঁর এই কর্মকাণ্ড মোটেই ভালোভাবে নেননি ভারতীয় জনগণ। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাঁর এই কাজের নিন্দা করেন। তারপরেই বিহারের মুজফফরপুরের আইনজীবী সুধীর কুমার ওঝা মুজফফরপুর আদালতে সিধুর নামে মামলা দায়ের করেন। তাঁর মামলা গ্রহণ করেছে আদালত। ২৪ তারিখ শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
কিন্তু মামলা কেন করলেন সুধীর বাবু?
তাঁর বক্তব্য, পাকিস্তানে ইমরান খানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে গিয়ে পাক সেনা প্রধান জেনারেল বাজওয়াকে জড়িয়ে ধরে সিধু ভারতের মানুষদের আঘাত দিয়েছেন। প্রায়শই সীমান্ত পেরিয়ে পাক সেনার অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে। তাদের হাতে মারা যাচ্ছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর বীর জওয়ানরা। এই অনুপ্রবেশে প্রত্যক্ষ হাত রয়েছে জেনারেল বাজওয়ার। তাই তাঁকে জড়িয়ে ধরে মোটেই ভালো কাজ করেননি সিধু।
সিধুর এই কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেছেন বিজেপি নেতারাও। তাঁদের বক্তব্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর শেষকৃত্যে উপস্থিত না থেকে সিধু পাকিস্তানে ইমরান খানের শপথ গ্রহণে গিয়েছিলেন। অথচ সিধুর বিজেপি নেতা ও সাংসদ হয়ে ওঠার পেছনে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হাত ছিল বাজপেয়ীর। তাই তাঁর শেষ যাত্রায় উপস্থিত থেকে ন্যূনতম সম্মানটুকু দেখাতে পারতেন এই প্রাক্তন ক্রিকেটার। সিধুকে পাকিস্তানে পাঠানোর সিদ্ধান্ত কংগ্রেসের পরিকল্পনা বলেই ধারণা বিজেপি নেতাদের একাংশের। তাঁদের বক্তব্য, দেশ বিরোধী কাজে নেমেছে কংগ্রেস। সিধুকে পাকিস্তান পাঠাচ্ছে। অন্যদিকে বিজেপি সরকারকে উৎখাত করতে পাকিস্তানের সাহায্য চাওয়া মণিশঙ্কর আইয়ারের সাসপেনশনও তুলে নিয়েছেন রাহুল গান্ধী।
এই প্রসঙ্গে জনতা দল (ইউনাইটেড) মুখপাত্র নীরজ কুমার বলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর শেষ যাত্রায় উপস্থিত না থেকে পাকিস্তান গিয়ে মোটেই ভালো কাজ করেননি সিধু। কারণ দলমত নির্বিশেষে সব রাজনৈতিক নেতারা বাজপেয়ীর শেষকৃত্যে উপস্থিত হয়েছিলেন। সিধুর এই কাজ তাঁর নিজেরই সম্মান নষ্ট করল বলে মত নীরজ কুমারের।
মুজফফরপুর আদালতে সিধুর বিরুদ্ধে দেশকে অসম্মান করা, শান্তি ভঙ্গ করার চেষ্টা প্রভৃতি ধারায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সুধীর বাবু। এই ব্যাপারে সিধুর তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এখন দেখার খেলোয়াড় জীবনে ডাকাবুকো এই ব্যাটসম্যান মামলার বাউন্সার কীভাবে সামলান?
Be the first to comment