বুধবার কর্তারপুর করিডোরের উদ্বোধনে পাকিস্তানে গিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্কের মুখে পড়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা পাঞ্জাবের মন্ত্রী নভজ্যোৎ সিং সিধু। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সিধুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন কেন? বৃহস্পতিবার দেখা গেল, পাকিস্তানে আশ্রয় পাওয়া এক বড় মাপের খলিস্তানি নেতার সঙ্গে ছবি তুলেছেন সিধু। সম্প্রতি কাশ্মীরের পাশাপাশি পাঞ্জাবেও জঙ্গিদের মদত দিচ্ছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। কয়েকদিন আগেই অমৃতসরে গ্রেনেড ছুঁড়ে কয়েকজনকে হত্যা করেছে খলিস্তানিরা। এরপরে খলিস্তানি নেতার সঙ্গে সিধুর ছবি দেখা যাওয়ায় নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
যে খলিস্তানি নেতার সঙ্গে সিধুর ছবি দেখা গিয়েছে, তাঁর নাম গোপাল সিং চাওলা। তিনি নিজের ফেসবুক পেজে ছবিটি আপলোড করেছেন। চাওলা পাকিস্তানে শিখ গুরুদোয়ারা প্রবন্ধিক কমিটির প্রধান। কয়েকমাস আগে ভারতের প্রতিনিধিরা লাহোরের এক গুরুদোয়ারায় ভারত থেকে আগত শিখ তীর্থযাত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু চাওলা ভারতের দূতকে বাধা দেন। অমৃতসরে গ্রেনেড হামলার চক্রান্ত করেছিল যারা, তাদের সঙ্গে চাওলার যোগ আছে বলে জানা যায়। তিনি লস্কর ই তৈবার নেতা হাফিজ মহম্মদ সইদেরও ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। চাওলার সঙ্গে সিধুর ছবি দেখে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নাকভি বলেছেন, পাকিস্তানের উদ্দেশ্য ভালো নয়।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাওয়েজাকেও বুধবার দেখা গিয়েছে, চাওলার সঙ্গে হেসে কথা বলছেন। পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর থেকে পাকিস্তানের কর্তারপুরে চার কিলোমিটার করিডোর নির্মাণের জন্য বুধবার কাজ শুরু করেছে পাকিস্তান। ২০১৯ সালে গুরু নানকের জন্মের ৫৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ওই করিডোর তীর্থযাত্রীদের উদ্দেশে খুলে দেওয়া হবে। সেই উপলক্ষে যে অনুষ্ঠান হয়েছে, তাতে আমন্ত্রিত ছিলেন সিধু।
এর আগে ইমরান খানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে গিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন সিধু। তাঁকে দেখা গিয়েছিল, পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে আলিঙ্গন করছেন। কিছুদিন আগে যখন শোনা গেল সিধু ফের পাকিস্তানে যাবেন, তখন বিজেপি আপত্তি তোলে। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং বলেছেন, আমি সিধুকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তুমি পাকিস্তানে যাচ্ছ কেন? সে বলেছে, আমি ব্যক্তিগত আমন্ত্রণে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে ইমরান খান বলেন, দুই সভ্য দেশের মধ্যে যেমন সম্পর্ক থাকা উচিত আমরা ভারতের সঙ্গে তেমনই সম্পর্ক চাই। আমাদের প্রতিটি রাজনৈতিক দল এমনটাই চায়। ভারতের অনেকে মনে করে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী শান্তির পক্ষে বাধা। আমি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বলতে চাই, সেনাবাহিনীও শান্তি চায়।
কাশ্মীর সম্পর্কে ইমরান বলেন, মানবিকতার প্রতি সম্মান রেখেই ওই সমস্যার সমাধান করতে হবে। সিধুর প্রশংসা করে বলেন, তিনি যদি পাকিস্তানের পাঞ্জাব থেকে ভোটে দাঁড়ান, জিতে যাবেন।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কাউর। সিধুর সঙ্গে ইমরানের ঘনিষ্ঠতা দেখে তিনি কটাক্ষ করেন, ইমরান বলেছে, সিধু পাকিস্তান থেকেও নির্বাচনে লড়তে পারবেন। মনে হচ্ছে ভারতের থেকে পাকিস্তানেই সিধু বেশি সম্মান ও ভালোবাসা পান। ওদেশে তাঁর অনেক ভালো বন্ধু আছে।
Be the first to comment