মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং দক্ষিণ লোনাক লেক উপচে বিপুল জলের স্রোতে বিপর্যস্ত সিকিম। বুধবার গোটা দিন জুড়ে সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে তিস্তা।নদীর ঘোলা জলের ঘূর্ণিতে এ বার ভেসে আসছে একের পর এক দেহ। সময় যত গড়াচ্ছে, তিস্তার ধ্বংসলীলায় বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। সেইসঙ্গে বাড়ছে আতঙ্ক। বন্ধ হচ্ছে একের পর এক রাস্তা।
সিকিমের আকস্মিক বন্যায় অন্তত ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ১০০ জনেরও বেশি এখনও নিখোঁজ । কঠিন পরিস্থিতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং এনডিআরএফ অর্থাৎ বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী খরস্রোতা তিস্তায় জোরকদমে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সরকারি তরফে জানানো হয়, বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১৮ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছ’জনের দেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চার জন সেনা জওয়ান আর বাকি দু’জন সাধারণ মানুষ।ময়নাগুড়ি ব্লকে থেকে আটটি দেহ, জলপাইগুড়ি সদর ব্লক থেকে তিনটি, মালবাজার এবং ক্রান্তি ব্লক থেকে দু’টি করে দেহ উদ্ধার হয়েছে। সকলের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গণপত বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত মোট ১৫টি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এঁদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।’’ কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে তিস্তা থেকে উদ্ধার হয়েছে দু’টি দেহ।সিকিম প্রশাসন সূত্রে খবর, বিপর্যয়ে মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজনের। ২৩ জওয়ান-সহ শতাধিক নিখোঁজ। আহত প্রায় ৩০।
এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে লাচেন এবং লাচুং-এ প্রায় ৩ হাজার লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিকিমের মুখ্য সচিব বিজয় ভূষণ পাঠক জানান, “৭০০ থেকে ৮০০ গাড়িচালক আটকে রয়েছেন। ৩,১৫০ জনমোটরসাইকেল আরোহীও আটকে বিপর্যস্ত এলাকায়। সেনা ও বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে সবাইকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।” সেনাবাহিনীর সাহায্যে ইন্টারনেট কলের মাধ্যমে তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার জন্যও চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সরকারি সূত্রে দাবি।
সেনাবাহিনীর তরফে চালু করা হয়েছে হেল্প লাইন। পূর্ব সিকিমের হেল্প লাইন নম্বর 87569-91895. উত্তর সিকিমের হেল্প লাইন নম্বর 87508-87741 । নিখোঁজ ২৩ জন সেনার সন্ধান পেতেও হেল্প লাইন চালু করা হয়েছে। নম্বর 75883-02011 প্রশানের তরফে সিংতাম, রংপো, দিকচু ও আদর্শগাঁও সহ বিভিন্ন জায়গায় ১৮টি ত্রাণশিবির খুলেছে।
Be the first to comment