বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন আমি অত্যন্ত আনন্দিত। ভারত সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এবং খানিকটা আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, রবীন্দ্রনাথ যেমন আপনাদের তেমনি রবীন্দ্রনাথ আমাদেরও। দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত তিনি লিখেছেন। তাঁর বেশিরভাগ কবিতা বা সৃষ্টি বাংলাদেশের মাটিতে বসে লেখা তাই আমাদের অধিকার রবীন্দ্রনাথের প্রতি একটু বেশি। এখান থেকে আমি দেশিকোত্তম পেয়েছি। তবে তার থেকেও বড় ব্যাপার যে বিশ্ব প্রকৃতির মাঝখানে থেকে, খোলা আকাশের নিচে থেকে যে পাঠগ্রহন করে ছাত্র-ছাত্রীরা তা অত্যন্ত মহৎ প্রচেষ্টা। কবিগুরুর উদ্দেশ্যে বলা যায় তোমার কৃতিত্বে তুমি যে মহান। আসলে বিশ্বের যে কোনো জায়গায় যাই না কেনো সব জায়গায় রবীন্দ্রনাথকে পাই আমরা। আমাদের দেশের মাতৃভাষা বাংলা হবে নাকি উর্দু হবে তা নিয়ে প্রবল বাকবিতিণ্ডা হয়। অবশেষে আসে আমার ভাইয়ের রক্তরাঙায় ২১শে ফেব্রুয়ারী। অনেক তরুণ তাজা প্রাণের রক্তদানের মাধ্যমে বাংলাভাষা আমাদের রাষ্ট্রীয় ভাষা তথা মাতৃভাষার স্বীকৃতি পায়। আমাদের নতুন রাষ্ট্র গঠনই হোক অথবা ভাষা আন্দোলনই হোক সবক্ষত্রে আমরা ভারত সরকারের সাহায্য পেয়েছি। সেজন্য ইন্দিরা গান্ধী সহ ভারতবর্ষকে সম্মান জানাই। ১৯৭৫ সালে আমি তখন বিদেশে, আমার পরিবারের অধিকাংশ মানুষকে খুন করা হয় তখনও বন্ধুর মত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। আমার বাবা বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমান রবীন্দ্রনাথের বিশেষ অনুরাগী ছিলেন। যখন গ্রামের বাড়িতে যেতেন, আমরা যেতাম। তখন বাবা আমাদের রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করে শোনাতেন। বিশেষ এই কবিতাটি শোনাতেন, “যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চল রে”।
সাম্প্রতিক কালে ছিটমহল নিয়ে যে সীমানা চুক্তি স্বাক্ষরিত হল তা ভারতবর্ষের পার্লামেন্টের দলমত নির্বিশেষে সকলেই সমর্থন করেন। এজন্য আমি ভারত সরকার ও ভারতবর্ষের সমস্ত রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আমরা রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রেও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়েছি। আমরা বাংলাদেশে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় করেছি কবিগুরুর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে। আমি কাল পশ্চিমবঙ্গের নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে যাব। এটাও নজরুল ইসলামের জন্মদিনে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা। আমাদের প্রতিবেশি দেশগুলির ভেতর শত্রুতা করা উচিত নয়। আমাদের শত্রু একটাই তা হল দারিদ্র। আপনারা শুনলে খুশি হবেন বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে তকমা পাচ্ছে। সবশেষে বলি এখনও তৃণমূল স্তরে বা প্রান্তিক স্তরে যে সকল মানুষ আছেন তা যেকোনো দেশই হোক না কেন তাদের সমৃদ্ধি হোক, উন্নয়ন হোক, বিকাশ হোক।
Be the first to comment