বালিশের পাশে বা নীচে মোবাইল ফোন নিয়ে ঘুমোন ? ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে মেসেজ করেন না তো? আপনি জানলেনই না, অথচ আপনি মেসেজ পাঠিয়েছেন কাউকে। অদ্ভুত কোনও মেসেজ, হয়তো বাক্যটার কোনও মানেই হয় না, যাকে বাংলায় বলে স্রেফ হিজিবিজি। ঘুম ভাঙল যখন আপনারই কোনও কনট্যাক্টের তালিকায় থাকা কেউ আপনাকে ফোন করে বলল, আরে এটা কী পাঠিয়েছ! কী উত্তর দেবেন? আপনার তো এমন কোনও টেক্সট পাঠানোর কথা মনেই পড়ছে না।
আমেরিকার একটি গবেষণা বলছে, এমনও হয়। অন্তত আজকাল হচ্ছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, কলেজ-পড়ুয়াদের মধ্যে অন্তত ২৫ শতাংশ ঘুমিয়ে টেক্সট করে। তাদের বড় অংশেরই হয় মনে থাকে না তারা মেসেজ পাঠিয়েছে, বা কী মেসেজ পাঠিয়েছে। তবে একটা বাঁচোয়া, ঘুমের ঘোরে পাঠানো ওই সব মেসেজের বেশির ভাগই অর্থহীন বাক্য। মানে, পরের দিন ঘুম ভাঙলে লজ্জা পাওয়ার মতো কিছু পাঠিয়ে অপ্রস্তুত হওয়ার মতো পরিস্থিতি খুব একটা হয় না।
আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ার ভিলানোভা ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় দেখা গেছে, স্লিপ টেক্সটিং বেড়েই চলেছে। ৩৭২ জন পড়ুয়ার উপর করা ওই সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই তথ্য। তাদের মধ্যে ২৫ শতাংশ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে মেসেজ পাঠায়। তাদের মোবাইল ঘেঁটেই জানা গেছে স্লিপ টেক্সটিং-এর কথা। ওই পড়ুয়াদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তারা কত ঘণ্টা ঘুমোয়। ঘুমোনোর সময় তাদের মোবাইল কোথায় রাখা থেকে। জানা গেছে, অধিকাংশ ছাত্রেই মোবাইল তাদের বালিশের পাশেই থাকে। সারা রাত তাদের ফোনে মেসেজ আসতে থাকে। ফলে বিপ বা আওয়াজ হয় বা আলো জ্বলে ওঠে। ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। আধ-ঘুমে মোবাইল হাতে নিয়ে মেসেজের জবাব দেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়।
ওই গবেষকদের প্রধান এলিজাবেথ ডাওডেল জানান, স্লিপ টেক্সটিং যারা করে, তারা পরের দিন সকালে কিছুই মনে করতে পারেনি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, টিনএজার ও কলেজ পড়ুয়াদের ঘুম উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গেছে। সারা বিশ্বেই এই বয়সের ছেলেমেয়েরা সবচেয়ে কম ঘুমোয়। স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার, নেশার মতো স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা, আমি অলওয়েজ়-অন–এই মনোভাব ও এই লাইফস্টাইলের ফলে কমছে ঘুম। তা ছাড়া, এই বয়সের ছেলেমেয়েদের উপর বাবা-মায়েদের নিয়ন্ত্রণও কমে যায়।
এতে কিন্তু সামগ্রিক ভাবে লাইফস্টাইলটাই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। তাই ঘুমোনোর সময় মোবাইলকে শয্যাসঙ্গী না-ই বা করলেন!
Be the first to comment