রাজসাক্ষী হিসাবে শ্বশুর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গোপন জবানবন্দি দিলেন জামাই কল্যাণময়

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- রাজসাক্ষী হিসাবে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শ্বশুর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গোপন জবানবন্দি দিলেন জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। কল্যাণময়ের বয়ান পার্থর বিপদ বাড়াতে পারে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। সূত্রের খবর, কী ভাবে এই দুর্নীতি হয়েছে, কত কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে, সেই হিসেব দিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জামাই।

কিছুদিন আগেই পার্থ চট্টোপাধ‌্যায়ের জামাই কল‌্যাণময় ভট্টাচার্য ইডির প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজসাক্ষী হতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন। পরবর্তীতে তা মঞ্জুর হয় ব্যাঙ্কশালে ইডির বিশেষ আদালতে। জানা যায়, নিজের অপরাধ মার্জনা করার আবেদনও জানান কল্যাণময়। এরপরই ইডির বিশেষ আদালতে বিচারক জানান, কল‌্যাণময় একজন ম‌্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দিতে পারেন। কল‌্যাণময়ের আবেদন অনুযায়ী আদালত নির্দেশ দেয়, তিনি নগর ও দায়রা আদালতে ২০ নম্বর জুডিশিয়াল ম‌্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দেবেন। নির্দেশ মোতাবেক মঙ্গলবার আদালতে গোপন জবানবন্দি দিলেন কল্যাণময়। ২৬ মার্চ ও ৩১ মার্চ পার্থর বিরুদ্ধে সাক্ষ‌্যদান করতে পারেন আরও দু’জন। পাশাপাশি এই সময় তিনি নাকি কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির হিসাবও দিয়েছেন বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে জানা গিয়েছে ৷
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কল্যাণময় ভট্টাচার্য ও তাঁর অধীনে থাকা কয়েকটি সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। ওই মামলার বিচারও শুরু হয়ে গিয়েছে। শ্বশুর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশেই তিনি পিংলায় ‘বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট’-এর অন্যতম মেম্বার ছিলেন বলে ইডির কাছে লিখিত বয়ান দেন কল্যাণময়। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর স্ত্রী বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর তাঁদের আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ কয়েক জনকে নিয়ে এই ট্রাস্ট তৈরি হয়েছিল। সেখানে ১৫ কোটি টাকা বিনিয়োগও হয়েছিল। ট্রাস্টের মাধ্যমে একটি জমি কেনা হয় ও স্কুল তৈরি হয় বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি। ইডি আরও দাবি করেছে, কল্যাণময় তাঁর লিখিত বয়ানে জানিয়েছিলেন, তিনি তাঁর শ্বশুর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশেই সব কিছু করেছেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মতে, সেগুলি কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি ৷ আর এইগুলি প্রত্যেকটি প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার লভ্যাংশের টাকা। অর্থাৎ ট্রাস্টের আড়ালে নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলে অনুমান ইডি-র।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, কল্যাণময় ভট্টাচার্য যেহেতু পার্থ চট্টোপাধ্যায় জামাই ফলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একাধিক অজানা প্রশ্নের উত্তর তাঁর এই গোপন জবানবন্দির মাধ্যমে মিলতে পারে। এছাড়াও ‘রাজসাক্ষী’ হওয়ায় এতদিন ধরে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যে জট খুলতে অপারগ ছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, সেই জট অনায়াসেই এবার খুলে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*