পাঁচ রাজ্যে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর আগামিকাল বৈঠকে বসতে চলেছেন কংগ্রেসের উচ্চ পদস্থ নেতারা। রবিবার বিকেল ৪ টেয় কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। কংগ্রেসের সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে এই বৈঠক হবে বলেই সূত্রের খবর। পাঁচ রাজ্যে কংগ্রেসের করুণ ফলাফল নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা। এর পাশাপাশি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে।
এছাড়াও সেপ্টেম্বরে কংগ্রেসের অন্দরে নির্বাচন নিয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর। জাতীয় রাজনীতি থেকে ক্রমশ প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি। অন্তত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের এমনটাই মতামত। পাঁচ রাজ্যে কংগ্রেস ধুয়ে মুছে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। পাঁচ রাজ্যে কংগ্রেসের করুণ ফলাফলের পর গতকালই ‘জি-২৩’ নেতারা বৈঠকে বসেন। এই বৈঠকের মাধ্যমে কংগ্রেসের হাই কম্যান্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এরপরই তড়িঘড়ি আগামিকাল বৈঠকে বসতে চলেছেন কংগ্রেসের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা।
১০ মার্চ পাঁচ রাজ্যর বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সেই ফলাফলে কংগ্রেসের ধরাশায়ী অবস্থা প্রতিফলিত হয়েছে। গত পাঁচ বছর পঞ্জাবে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। কিন্তু ২২ এর বিধানসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টির কাছে হেরে গিয়েছে কংগ্রেস। ১১৭ টি আসনের মধ্যে মাত্র ১৮ টি আসন নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছে কংগ্রেস। উত্তর প্রদেশে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢড়া নিজে একাধিক নির্বাচনী শোভাযাত্রা এবং জনসভা করেছেন। সেখানেও বেশি আসন সংখ্যা পায়নি কংগ্রেস। ৪০ শতাংশ মহিলাকে প্রার্থী তালিকায় জায়গা দিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু কোনও স্ট্র্যাটেজিই ধোপে টিকল না। এমনকি উন্নাও, হাথরস,কৃষক আন্দোলন এবং লখিমপুর খেরির মতো ঘটনাকে ইস্যু করেও সুবিধা করতে পারেনি কংগ্রেস। ৪০৩ টি বিধানসভা আসনের মধ্যে মাত্র ২ টি আসন পেয়েছে তারা। বরং গত বিধানসভা নির্বাচনের থেকে আসন সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে কংগ্রেসের।
এই পাঁচ রাজ্যের ভরাডুবি নিয়ে বিশ্লেষণের উদ্দেশেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে সূত্রের খবর। পাঁচ রাজ্যে এই ভরাডুবির পর সেই হার হাসিমুখে মেনে নিতে যখন গান্ধী পরিবার ব্যস্ত তখন এই গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বহু নেতা। তবে এই বিরোধ নতুন নয়। ২০২০ সালেই ২৩ জন কংগ্রেস নেতা সনিয়া গান্ধীর কাছে চিঠি পাঠান। সেই চিঠিতে তাঁরা দলের অন্দরে সাংগঠনিক পরিবর্তন আনার আবেদন জানিয়েছিলেন। এর পাশাপাশি দল পরিচালনার জন্য একজন উপযুক্ত নেতৃত্ব নির্বাচন করার আর্জিও জানিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, জানা গিয়েছে কংগ্রেসের খারাপ ফলাফলের পর গতকালই প্রবীণ কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদের বাড়িতেই বৈঠকে বসেন বিক্ষুব্ধ নেতারা। তাঁদের গতকালের বৈঠকে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্বই প্রকাশ পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এবং তাতে কার্যত সংকটে পড়েছেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। আগামিকাল বৈঠক হবে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির।
Be the first to comment