রাজভবন সংঘাতের বাতাবরণ অব্যাহত। আর এরই মধ্যে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিন্দা করে মেসেজ পাঠাচ্ছেন রাজ্যপাল। এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা সৌগত রায়।
তৃণমূল সাংসদের বক্তব্য, “রাজ্যপাল প্রতিদিন যা করছেন টুইট করে, তাতে রাজ্যপালের পদের অমর্যাদা করছেন। আমি তাঁর কাছে আবেদন করেছি, যাতে তিনি এর থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু তিনি (রাজ্যপাল) তা না করে আমার কাছে হোয়াটসঅ্যাপ পাঠাচ্ছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিন্দা করে।”
সৌগত রায় আরও বলেন, “আমি ওঁনার হোয়াটস্অ্যাপের জবাব দিতে চাই না। দিলেই তিনি সেটা আবার প্রকাশ করে দেবেন। কিন্তু ওনাকে আমি মুখে বলেছি যে আপনি এগুলো করবেন না। এগুলো আমাদের পক্ষে, তৃণমূল কংগ্রেসের লোক হিসেবে সহ্য করা সম্ভব নয়। কিন্তু তিনি থামছেন না।
রাজ্য–রাজ্যপাল সংঘাত এখন আর নতুন ইস্যু নয়। জগদীপ ধনখড় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন। কখনও শাসক দলের সঙ্গে সরাসরি আবার কখনও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পত্রযুদ্ধ। একের পর এক ইস্যুতে টুইট বাণে বিদ্ধ করেছেন রাজ্য সরকারকে। পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীও একাধিকবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যপালকে তার সাংবিধানিক গণ্ডির মধ্যে থেকেই কাজ করা উচিৎ। নবান্ন – রাজভবন এই চাপান উতোরের মধ্যে বুধবার সৌগত রায় যে অভিযোগ, রাজ্য়পালের বিরুদ্ধে করছেন, তা রাজ্য রাজনীতির নিরীখে যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি গোয়ায় দলের প্রচারে গিয়ে রাজ্যপালকে ‘রাজভবনের রাজা’ বলে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমোর এ হেন ভাষায় তিনি ‘অপমানিত’, একথা স্পষ্ট করে টুইটে বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
টুইটে ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল লিখেছেন, “বিস্মিত! গত ১৬ ডিসেম্বর গোয়া সফরে গিয়ে এ কী ধরনের শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? ‘রাজভবনের এক রাজা’ এটা কী ধরনের শব্দবন্ধ! মুখ্য়মন্ত্রী কি জানেন না, রাজ্যপালের পদ একটি সাংবিধানিক পদ এবং এই দায়িত্ব একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব! ”
অন্য একটি টুইটে রাজ্যপাল লিখেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে নিয়ে যে ধরনের মন্তব্য করেছেন তা অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ ও অপমানজনক। এ ধরনের মন্তব্য করে ওঁ কেবল অপমানই করেননি সাংবিধানিক পদমর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছেন। এই ধরনের মন্তব্য সংবিধান বিরোধী।” আরও একটি টুইটে প্রায় অনুরূপ বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল।
Be the first to comment