কেন্দ্রের জেদের কারণেই টাকা পাচ্ছেন না রাজ্যের কৃষকরা, প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্যের পাল্টা জানিয়ে দিলেন তৃণমূল নেতা, সাংসদ সৌগত রায় ৷ শুক্রবার দেশের কৃষকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে বাংলার ৭০ লক্ষ কৃষক বছরে ৬ হাজার টাকার কেন্দ্রীয় সাহায্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন৷ রাজনৈতিক কারণেই কৃষকদের এই সুবিধে থেকে বঞ্চিত করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৷
মোদীর এই অভিযোগ যে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন তা তথ্য দিয়ে প্রমাণ করেছেন সৌগত রায় ৷ তিনি জানান যে, রাজ্যে কৃষকদের আয় তিন গুণ হয়েছে ৷ যা গোটা দেশে এখনও দ্বিগুণও হয়নি ৷ রাজ্য একর প্রতি কৃষকদের পাঁচ হাজার টাকা দেয় বলে জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ ৷
প্রসঙ্গত, অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধি প্রকল্পে দ্বিতীয় কিস্তির ১৮ হাজার কোটি টাকা প্রদানের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৷ প্রায় ৯ কোটি কৃষক এর ফলে উপকৃত হবেন ৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি কথাও বলেন তিনি ৷ কৃষকরা কীভাবে নতুন কৃষি আইনের সুফল পাচ্ছেন, সরকার কীভাবে কৃষকদের পাশে রয়েছে, তা তুলে ধরাই ছিল এই আলাপচারিতার মূল উদ্দেশ্য ৷ এরপরেই কৃষকদের উদ্দেশে বার্তা দিতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গ তোলেন প্রধানমন্ত্রী৷ অভিযোগ করেন, একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ সরকারই রাজ্যের সত্তর লক্ষ কৃষককে এই সুবিধে থেকে বঞ্চিত করছে ৷
এদিন ক্ষোভের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্য সরকারকে এক পয়সাও দিতে হবে না৷ পুরোটা কেন্দ্র দেবে৷ কিন্তু শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজি হচ্ছে না ৷ বাংলার অনেক কৃষক এই সাহায্য চেয়ে সরাসরি ভারত সরকারকে চিঠিও লিখেছেন ৷ বাংলার লক্ষ লক্ষ কৃষক অনলাইনে এই সাহায্যের জন্য আবেদন করেছেন৷ তার পরেও রাজ্য সরকার এই প্রকল্প আটকে রেখেছে৷’ বামেরা কেন এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন না, সেই প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী ৷
এই প্রসঙ্গে সৌগত রায় বলেন যে রাজ্য সরকারের মাধ্যমে এই টাকা দিলেই প্রকল্প চালু হয়ে যাবে ৷ সরাসরি কৃষকদের দেওয়া যাবে না ৷ অন্যদিকে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় অবশ্য দাবি করেছেন, বামেদের প্রতি তারা নিজেদের মনোভাব বদলাচ্ছেন না ৷ তিনি বলেন, বামেদের সঙ্গে আমাদের মতবিরোধ আছে৷ কিন্তু কৃষক আন্দোলনে অনেক আগে থেকে আমাদের সমর্থন আছে৷ বামেরাও সমর্থন করছে৷ অন্য বিষয়ে বামেদের সঙ্গে মতবিরোধ থাকলেও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, কৃষক আন্দোলন নিয়ে একসঙ্গে কথা বলতে আপত্তি নেই৷ এ ভাবে কৃষক আন্দোলনে চিড় ধরানো যাবে না৷’
রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে সচেতন ভাবেই রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে বামেদের ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরতে চাইলেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের৷ রাজ্যের কৃষকদের সহানুভূতি আদায় করার পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অস্বস্তি বাড়াতেই এমন কৌশলী চাল দিলেন বলেই মনে করা হচ্ছে ৷
Be the first to comment