বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ কাঁথি মহকুমা আদালতের। বুধবার কাঁথি মহকুমা আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে কাঁথি থানার আইসি-কে। কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজের ভবন তৈরির কাজের আর্থিক দুর্নীতিতে অভিযোগ উঠেছে সৌমেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। সৌমেন্দু অধিকারী কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান থাকাকালীন এই দুর্নীতি হয় বলে অভিযোগ। জনৈক আবু সোহেল সৌমেন্দুর বিরুদ্ধে এই মামলা করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এই মামলা হয়।
আবু সোহেলের আইনজীবী মঞ্জু রহমান খান জানিয়েছেন, এ বিষয়ে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী আবু সোহেল কাঁথি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। পরে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন আবু সোহেল। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই কাঁথি এসিজেএম আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। সেখানেই দুর্নীতির মামলা দায়ের করা হয়েছে। আইনজীবী জানিয়েছেন কাঁথির পিকে কলেজের ভবন তৈরি নিয়েই মূলত এই অভিযোগ ওঠে। সেই সময় ওই কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু। অভিযোগ, কোনও প্ল্যানিং ছাড়াই ভবন তৈরি করা হয়েছিল। চারটি বিল্ডিং তৈরি করা হয়েছিল বলে দাবি। আর সেই বিল্ডিং তৈরি করার ক্ষেত্রে কোনও আইনি পথ অবলম্বন করা হয়নি। কী ভাবে প্ল্যানিং ছাড়াই বিল্ডিং তৈরি হল, তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে।
এ দিন, এই মামলায় আইসিকে এফআইআর করার নির্দেশ দেন কাঁথি মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিমা শুক্লা। বিচারক এই মর্মে আগামী ১৬ এপ্রিল কাঁথির আইসিকে আদালতে রিপোর্ট পেশ করারও নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে, এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ সৌমেন্দু অধিকারী। এই মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রমাণ দিতে বলুন। মুখে তো ট্যাক্স লাগে না। ভোটের সময় যা খুশি বলা যায়।’ কার্যত ওই আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে সৌমেন্দুও বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। বিধানসভা ভোটে দক্ষিণ কাঁথির বিজেপি প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্টও ছিলেন তিনি। এর আগে তৃণমূলে থাকাকালীন তিনি ছিলেন কাঁথি পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান। পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর, নবান্নের তরফে তাঁকে কাঁথির পুরসভার প্রশাসক হিসেবেও নিয়োগ করা হয়। তখনও শুভেন্দু তৃণমূলেই ছিলেন। পরে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে, শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই কাঁথির পুর প্রশাসক বদল করে রাজ্য সরকার। সরিয়ে দেওয়া হয় সৌমেন্দুকে। তবে এবার পুরভোটে তাঁকে টিকিট দেয়নি গেরুয়া শিবির, যা নিয়ে কটাক্ষ করেছে শাসক দল।
Be the first to comment