বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বৈঠকে থাকছেন না দলের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ তিনিই একুশের নির্বাচনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তার উপর সৌমিত্রের সঙ্গে দিলীপের সম্পর্কও অহি–নকুল। সেখানে শনিবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা দিলীপের। আর বৈঠকে তিনি যোগ দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন বিজেপির সাংসদ সৌমিত্র। এবার আবার বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ ও যুবমোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। সবমিলিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।
এখন অনেকেই তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরার চেষ্টা করছেন। টুইট থেকে চিঠি সবকিছুই দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ গোপনে ফোনে যোগাযোগ করেছেন। তবে নিজের অনুপস্থিতি নিয়ে সৌমিত্র বলেন, ‘এখন লকডাউন চলছে। সভা–সমাবেশ বন্ধ আছে। তাই রাজ্য সরকারের জারি করা লকডাউনের সিদ্ধান্তকে মান্যতা দিয়েই আমি বৈঠকে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ সৌমিত্রের এই বক্তব্য রাজ্য বিজেপির অন্দরের রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে।
ইতিমধ্যেই বাঁকুড়া জেলার বিজেপির মিডিয়া সেলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মেসেজ আসে। সেখানে জানানো হয়, ৫ জুন বিকেলে বিষ্ণুপুর লাক্সারি লজে সাংগঠনিক বৈঠক হবে। আর সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাৎপর্যপূর্ণভাবে তারপরেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ করেন সৌমিত্র খাঁ। এমনকী ত্যাগ করেন দলীয় হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপও। তখনই জল্পনা শুরু হয়। তাহলে কি দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে আবার তৃণমূল কংগ্রেসে সৌমিত্র?
উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর সেভাবে সক্রিয় থাকতে দেখা যায়নি সৌমিত্রকে। এবার দলের জেলার মিডিয়া সেলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন তিনি। ২০১১ সালে কোতলপুরে কংগ্রেসের বিধায়ক ছিলেন সৌমিত্র খাঁ। পরবর্তীকালে বিষ্ণুপুর থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ এবং বর্তমানে বিজেপির সাংসদ এই নেতা। তাঁর স্ত্রী সুজাতা এখনন তৃণমূল কংগ্রেসে। স্ত্রীর জন্য সাংবাদিক বৈঠকে চোখের জলও ফেলেন বিজেপি সাংসদ। আবেগতাড়িত হলেও সৌমিত্র তখনও স্ত্রীর তৃণমূল যোগের সিদ্ধান্তের জন্য বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ পর্যন্ত পাঠান।
তাহলে এখন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন কেন তিনি? এটা কী দিলীপ বিরোধিতার ইঙ্গিত? এই বিষয়ে সৌমিত্র বলেন, ‘এমন অনেক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থাকে। যেখানে ১৫০–২০০ গ্রুপে থাকেন। তবে কখনও কখনও একটা–দুটো থেকে আমাদের বেরিয়ে যেতে হয়। আমি দেখতে পাইনি, আমাদের যে আইটি সেল রয়েছে, এটি তাদের তালিকাভুক্ত গ্রুপ কি না। অনেক গ্রুপ তৈরি হয় রোজ। তার কোনও একটা থেকে বেরিয়ে যাওয়া মানেই বিজেপি ছেড়ে দেওয়া নয়।’
তিনি কী দলবদল করছেন? তাই বৈঠকে থাকছেন না? এই বিষয়ে সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘আড়াই বছর আগে আমি বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। যখন তৃণমূল কংগ্রেস থেকে এতজন দল বদলে বিজেপিতে আসেননি। তখন থেকেই আমি বিজেপির সদস্য। তখন তিনজন বিধায়ক ছিলেন, এখন ৭৭ জন বিধায়ক রয়েছেন। তাই দলবদলের প্রশ্ন ওঠে না।’
Be the first to comment