দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মানুষরা ঐতিহাসিক সম্পদের ওপরে বাস করছেন। এই শহরের মাটি খুঁড়লে মিলত মৌর্য আমলের নানা সরঞ্জাম। কখনও মিলেছে মোগল আমলের জিনিসপত্র। কুষাণ যুগ, গুপ্ত সাম্রাজ্য, পাল, সেন আমলের সামগ্রীও কম মেলেনি। জায়গার নাম বাণগড়। প্রবীণ বাসিন্দারা জানান, দিনাজপুরের কাছারি থেকে পুনর্ভবা নদীর তীরের ওই সমৃদ্ধ জায়গার পত্তন করেছিলেন গঙ্গারাম চৌধুরী। ১৭৫১ সালে বর্গির হামলা ও অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে মুর্শিদাবাদের নবাব আলিবর্দি খাঁর সহায়তা চান তিনি।
অনেকেই মনে করেন, সম্ভবত গঙ্গারাম চৌধুরীর নামেই নামকরণ গঙ্গারামপুরের।সেই পুনর্ভবা আজও আছে। আজ, পুনর্ভবার উপরে কংক্রিটের বিশাল সেতু। মসৃণ চওড়া পাকা রাস্তা। মালদহ থেকে জেলা সদর বালুরঘাটের মধ্যে সহজ ও দ্রুত যোগাযোগ। ১৯৫০ সালের আগে তা কল্পনায় আনা যেত না। বালুরঘাট থেকে সরু ও খন্দে ভরা রাস্তা ধরে গুটি কয়েক বাস এসে পৌঁছত। গঙ্গারামপুরের পুনর্ভবার তীরে নৌকায় পার হয়ে ওপার থেকে ফের বাস ধরতে হত। সেখান থেকে এক দিকে মালদহ ও অন্য দিকে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের ন্যারো গেজ রেললাইন ধরতে হত।
গঙ্গারামপুর শহরবাসীর কাছে সে সবই অতীত। শহরের চৌপথি থেকে পূর্ব দিকে চওড়া ঝাঁ চকচকে নতুন একটি বাস টার্মিনাস চালু হয়েছে। পাশাপাশি গঙ্গারামপুর হাইরোড একটি ঝরনা তৈরি করা হয়েছে মালদা বালুরঘাট জাতীয় সড়কের উপর ডিভাইডারে নানান ধরনের গাছ লাগানোর পাশাপাশি গঙ্গারামপুর কালদিঘি পার্কে পর্যটক টানতে সুন্দর করে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।
তবে পুর পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ নেই বললেই চলে জল, নিকাশি সব ব্যবস্থা ভাল,পুরসভার পক্ষ থেকে প্রতিটি পরিষেবার মান উন্নয়নের জন্য একাধিক প্রকল্পের কাজ চলছে। গঙ্গারামপুর কিন্তু গোটা উত্তরবঙ্গের কাছেই দু’টি কারণে এখনও বেশ বিখ্যাত। মিষ্টি দই আর মাছ।
Be the first to comment