শেষ রক্ষ হল না। ভোটেই ভরসা রাখতে হল শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপাল শ্রীসেনাকে। শুক্রবার পার্লামেন্ট অধিবেশন বাতিল করেই রাতারাতি ভোটের সিদ্ধান্ত নিলেন শ্রীসেনা।
শুক্রবার মাঝ রাতে শ্রীসেনার ঘোষণা, ১৭ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কায় নতুন করে পার্লামেন্ট গঠন হবে, তার আগে ৫ জানুয়ারি সাধারণ নির্বাচন।১৯ থেকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয় পত্র জমা নেওয়া হবে।
শুক্রবারই পার্লামন্ট অধিবেশনে রাজাপাক্ষের ভাগ্য পরীক্ষা ছিল। কিন্তু অধিবেশন শুরুর আগেই জানা যায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন না রাজাপাক্ষে।তা জেনেই প্রথমে অধিবেশন বতিল , তারপর তরিঘরি ভোটের সিদ্ধান্ত নিলেন শ্রীসেনা। সাংবিধানিক সংকট মেটাতে আর কোনও পথ খুঁজে পেলেনা না তিনি।
গত ২৬ অক্টোবর আচমকা শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রম সিংহেকে বরখাস্ত করেন প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপাল শ্রীসেনা। তাঁর জায়গায় প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ করেন মাহিন্দ্রা রাজাপক্ষেকে। সেইসঙ্গে বন্ধ রাখেন পার্লামেন্টের অধিবেশন। পরে আন্তর্জাতিক চাপে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন, পার্লামেন্টের অধিবেশন ডাকবেন শীঘ্র। সেখানে রাজাপক্ষে গরিষ্ঠতা প্রমাণ করবেন। কিন্তু অধিবেশন শুরুর আগেই জানা যাচ্ছে, গরিষ্ঠতা জোগাড় করতে পারেননি রাজাপক্ষে। ফলে শ্রীলঙ্কায় নতুন করে সাংবিধানিক সংকট দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
শ্রীলঙ্কার সংসদে আসনের সংখ্যা ২২৫টি। গরিষ্ঠতা পেতে গেলে ১১৩টি আসন প্রয়োজন। শুক্রবার দেশের শাসক ইউনাইটেড পিপলস ফ্রিডম অ্যালায়েন্সের মুখপাত্র কেহেলিয়া রামবুকোয়েলিয়া বলেন, এই মুহূর্তে ১০৫ থেকে ১০৬ জন এমপি তাঁদের আছেন। কেহেলিয়া এখন দেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী।
এর আগে শ্রীসেন এক জনসভায় ঘোষণা করেছিলেন, তাঁদের পক্ষে ১১৩ জন এমপি আছেন। আপাতত জানা যাচ্ছে, ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির আটজন এবং তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের একজন এমপি দলত্যাগ করে রাজাপক্ষেকে সমর্থন করবেন। এইভাবে অন্য দল থেকে এমপি ভাঙিয়েই রাজাপক্ষে সংসদে গরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু এদিন এক মন্ত্রীই জানিয়ে দিলেন, তাঁদের গরিষ্ঠতা নেই।
এই সবের মাঝেই আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বার বার পড়তে হচ্ছে শ্রীসেনাকে। জানা যাচ্ছে, শ্রীসেনার সমালোচনায় সরব হয়েছে রাষ্ট্রসংঘ থেকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। ভোটের সিদ্ধান্ত না নিলে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেই মুখ পুড়ত শ্রীসেনাদের।তাই মুখ বাঁচাতে মাঝ রাতে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা।
Be the first to comment