সুভাষ মজুমদার –
ভোটে ময়দানে লড়তে হলে মিনিমাম শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা কতটা থাকা দরকার তা এখনো তর্কের পর্যায়ে।কলেজ ছাত্র ছাত্রীদের কলেজ রাজনীতির পর আর দেখা যায়না ভোটের ময়দানে।
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট সামনেই। মিটে গেছে মনোনয়ন পর্ব থেকে প্রার্থী বাছাইয়ের যাবতীয় পক্রিয়া।ভোটের দিন কোর্টের রায়ে নির্ধারণ হলো আগামী সোমবার ১৪ই মে।।
এরই মধ্যে পাওয়া গেল সদ্য কলেজ পড়ুয়া পঞ্চায়েত সদস্য হিসাবে নির্দল থেকে প্রার্থী হয়েছেন আরিনা শীল। তারকেশ্বরের রামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের শীল পাড়া থেকে পঞ্চায়েত সদস্য হিসাবে ভোটের ময়দানে।
কলেজে কোন হোক কলরব বা প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেননি কোনো দিন।
কলেজ পাঠরত অবস্থায় প্রথম নির্বাচনে অংশ গ্রহন। মাস্টার্স ডিগ্রি তে সোশ্যালের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ।কলেজ জীবনে সেভাবে ছাত্র রাজনীতির ধারে কাছে যাননি কোনোদিন।তিনি মনে করেন রাজনীতিতে শিক্ষিত যুব সমাজের খুব প্রয়োজন।
কেন তার এই রাজনীতি জীবনে পদার্পন ?
গ্রামের রাজনীতিতে চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী উচ্চ শিক্ষিত কোনো মহিলা রাজনীতির ময়দানে নামেনি ।গ্রাম্য এলাকায় মেয়েদের রাজনীতি সেভাবে কেউ ভালো চোখে নেয়না কিন্তু রাজনীতির আঙিনায় শিক্ষিত ছেলে মেয়েদেরই দরকার।তারই পঞ্চায়েতের গত বারের যিনি উপ প্রধান ছিলেন তিনি নাকি নামটা প্রযন্ত সই করতে পারতেন না ,আমরাই এগিয়ে না এসে নিন্দা করি।
উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু প্রতিটা মানুষ কে তার পাই পাই হিসেব বুঝিয়ে দেওয়া দরকার ।সেখানে একজন শিক্ষিত যুবক যুবতীর ভূমিকা অনেক বেশি গুরুত্বের।
বর্তমানে মমতা ব্যানার্জি রাজ্যের মানুষের জন্য বহু জননীতি প্রকল্প নিয়েছেন ,সেক্ষেত্রে প্রতিটি প্রকল্প মানুষ কে বোঝাতে হবে কিন্তু অবশ্যই সেটা আগে নিজে বুঝতে হবে তবেই মানুষের উপকারে লাগবে।
ডঃ অমর্ত্য সেন বলছেন দেশের প্রতিটি উচ্চ পদ গুলিতে শিক্ষিত মানুষের থাকা দরকার ।কিন্তু সেটা যদি গ্রাউন্ড লেবেল থেকেই শুরু হয় তাহলে ভীত আরো শক্ত হবে ।আমরা শিক্ষিত সমাজ যারা অনেকের কাজের ভুল ধরি কিন্তু কই নিজেরা তো এগিয়ে আসিনা, আমি মনে করি দেশ গঠনে চিরাচারিত প্রথা ভেঙে নতুন জেনারেশন কে এগিয়ে এসে দেশের উন্নতির পথে ভূমিকা নিতে হবে।
তিনি বলেন আমি একজন মেয়ে এবং সদ্য কলেজ পাঠরতা কিন্তু ভোটের ময়দানে আমাকে অনেকেই বাঁধা দিয়েছে।তার সত্বেও আমি স্থীর সিদ্ধান্ত নিয়েই ভোটের ময়দানে নেমেছি ।আমি আমার গ্রাম কে আরো উন্নত করতে চাই।যদিও আমি তৃণমূল সমর্থক এবং মমতা ব্যানার্জি আমার আদর্শ । আমি আশাবাদী আমি জিতবই কারণ এখানকার যুব সমাজ এটাই চায় যে শিক্ষিত এবং নতুন জেনারেশন এগিয়ে আসুক।
নিজের গ্রামে তিনি বাড়ি বাড়ি প্রচার সা নিরছেন।তিনি বলেন গ্রামের প্রতিটি মানুষ জয়ের জন্য আশীর্বাদ করছেন।
আরিনার মা বিষ্ণুপ্রিয়া শীল বলেন মেয়ে নিজের সাহস নিয়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছে তার পাশে আমরা সবসময় আছি ও জিতুক বা হারুক।
প্রতিবেশী নিমাই চন্দ্র শীল বলেন ,দিদি মানুষের জন্য বহু প্রকল্প গ্রহণ করেছেন সেগুলো মানুষের কাছে সঠিক ভাবে পৌঁছে দিতে এদেরই দরকার, আমি চাই অরিনা জয়ী হোক।
গ্রামেরই এক মহিলা রুমা মুখার্জি বলেন গ্রামের মহিলাদের অনেক সম্যসার কথা একজন মেয়েকেই মন খুলে বলতে পারে , অরিনা যেহেতু আমাদের জন্য সাহস নিয়ে ভোটের ময়দানে লড়ছে ,ও জিতলে গ্রামের মেয়রদের অনেক উপকার হবে।
এব্যাপারে তারকেশ্বর পৌরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সামন্ত বলেন সবারই স্বাধীনতা আছে ভোটে অংশ গ্রহন করার , আমি শুনেছি অরিনা শীল নামে এক কলেজ পড়ুয়া ভোটে অংশ গ্রহন করছে তাকে সাধুবাদ জানাই এবং অনেক আশীর্বাদ রইলো তার জন্য।
তবে যেহেতু নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছে আমরা দেখবো যাতে তার কোনো অসুবিধা না হয়।এবং আগামী দিনে যদি আমাদের সাথে যোগ দেন আমরা সদরে গ্রহণ করবো আমাদের নেত্রী চাইছেন শিক্ষিত যুবসমাজ এভাবেই এগিয়ে আসুক।আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে হয়তো ওনাকে আমাদের দলের প্রার্থী হিসেবে নিবার্চনে অংশ গ্রহন করাতে পারতাম।
Be the first to comment