
রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদ। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি শান্ত হচ্ছে। এবার সেখানে সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষদের নিয়ে শান্তি কমিটি গঠনের দাবি জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। পাশাপাশি, মৃত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি ও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। গুরুতর আহতদের চিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা সরকারকে নিতে হবে।
গত শনিবার পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি শুভঙ্কর সরকার, সাংসদ ইশা খান চৌধুরী এবং পশ্চিমবঙ্গের জন্য ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি সম্পাদক অম্বা প্রসাদ সহ কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল মুর্শিদাবাদ এবং মালদার সামসেরগঞ্জ, ধূলিয়ান এবং সুতির উপদ্রুত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন এবং কংগ্রেসের নেতৃত্ব সেখানে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথাও বলেন। সেই প্রসঙ্গে সোমবার প্রদেশ কংগ্রেসের রাজ্য কার্যালয়ে এক সাংবাদিক বৈঠক করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেন, ‘পরিস্থিতি সামাল দিতে, এলাকার মানুষকে অভয় দিতে এখনি সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষদের নিয়ে তৈরি করতে হবে একটি ‘শান্তি কমিটি’, এবং ওই কমিটি সমস্ত জায়গায় গিয়ে ‘শান্তি বৈঠক’ করবে। তিনি পরিষ্কার বলেন, এই কমিটিতে শুধু তৃণমূল বিজেপিকে রাখলে চলবে না, এখানে সর্বদলীয় সদস্যদের রাখতে হবে পাশাপাশি, সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ থেকে শুরু করে ইমাম, পুরোহিতদেরও রাখতে হবে।’ এই কমিটি গ্রামে গ্রামে, গিয়ে ‘শান্তি বৈঠক’ করতে হবে। তাহলেই গ্রামের মানুষের মধ্যে সাহস আসবে, তবেই উৎকন্ঠা পরিস্থিতি থেকে জনসাধারণ আসতে আসতে বেরিয়ে আসব।
এদিকে, কংগ্রেস সভাপতি সরকারের কাছে আবেদন জানান, জাফরাবাদে যে পরিবারের বাবা ও ছেলে নিহত হয়েছে, তাঁদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি, পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দিতে হবে। এছাড়াও, সুতিতে যে ছেলেটি মারা গেছে তাঁর স্ত্রীকে সরকারি চাকরি দিতে হবে। এবং যারা গুরুতর আহতের চিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে।
পাশাপাশি সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি আরও বলেন, ‘দুই সম্প্রদায়ের যে সমস্ত সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে তা মহামান্য আদালতের একজন বর্তমান বিচারপতির তত্ত্বাবধানে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করতে হবে, এবং সমস্ত বিষয় নির্ধারণ করে এবং সরকারি আধিকারীককে দিয়ে ক্ষতি নির্ধারণ করে সেই কমিটির কাছে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তারপর সরকার যেনো সেই রিপোর্ট দেখে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে। পাশাপাশি, এই ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক পক্ষপাত যেন না করা হয় সেটাও উল্লেখ করেন শুভঙ্কর সরকার।
অন্যদিকে, রাজ্যপালের মালদহ ও মুর্শিদাবাদ সফর নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অভিযোগ করে বলেন, ‘রাজ্যপাল সাংবিধানিক প্রধানের ভূমিকা পালন করেননি।’ কারণ হিসাবে তিনি জানান, ‘পশ্চিমবঙ্গের মাননীয় রাজ্যপালও দাঙ্গা কবলিত এলকায় গিয়ে বিশেষ একটি শ্রেণির সঙ্গে দেখা করলেন এবং কথা বললেন; কিন্তু সর্ব শ্রেণির কথা শুনলেন না, ক্ষতিগ্রস্ত সকল সম্প্রদায়ের মানুষের খোঁজ নিলেন না। এটা সত্যি দুর্ভাগ্যজনক।’
Be the first to comment