
রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- বিজেপিকে সিপিএমের মুখপত্রে ফ্যাসিস্ট বলা হয়নি। এই হিম্মত কংগ্রেস ছাড়া কোনও রাজনৈতিক দলের নেই। জাতীয় কর্মশালা থেকে সিপিএমের বিরুদ্ধে ঝাঁঝালো আক্রমণ শানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার।
শনিবার কংগ্রেসের রাজ্য কার্যালয় বিধান ভবনে এক জাতীয় কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এরপরই সাংবাদিক বৈঠক করে আরএসএস এবং বিজেপির বিরুদ্ধে সিপিএমের অবস্থান নিয়ে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার।
আগামী দিনে দলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যমাত্রা মিশন ২০২৬-এর কর্মশালা থেকে অঙ্গীকার বদ্ধ হয় প্রদেশ কংগ্রেস। একই সঙ্গে আরএসএসের সমালোচনায় বামেরা নেই বলেই মনে করেন শুভঙ্কর সরকার। তাঁর কথায়, “বুথস্তরে শক্তি বাড়াতে আমরা প্রতিদিন চেষ্টা করছি। কংগ্রেস থেকে একমাত্র প্রতিবাদ করা হয়েছিল। বাকি রাজনীতিক দল থেকে মোহন ভাগবতকে নিয়ে কোনও প্রতিবাদ হয়নি। তবে আমরা রাস্তায় নামিনি কারণ, মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছিল। আরএসএস এমন এক চালিকা শক্তি, যে পিছন থেকে মদত দেয়। সিপিএমের পার্টির মুখপত্র পড়ে দেখবেন। সেখানেও বিজেপিকে ফ্যাসিস্ট বলা হয়নি। এই হিম্মত কংগ্রেস ছাড়া কোনও রাজনৈতিক দলের নেই।” তাঁর সংযোজন, ‘‘আমরা কেউ বিজেপিকে কোনও সময় ফ্যাসিস্ট বলি, কেউ বর্বর বলি। আবার কখনও কেউ তাকে সেই বন্ধনী থেকে বাইরে রাখি। কিন্তু কংগ্রেসের মতাদর্শ, কংগ্রেসের আদর্শ নিয়ে রাহুল গান্ধী প্রত্যেক দিন লড়াই করছেন। মল্লিকার্জুন খড়্গে লড়ছেন।’’ সঙ্গে ১৯৮৯ সালে রাজীব গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরাতে কলকাতার শহিদ মিনারে বিজেপি নেতাদের নিয়ে সিপিএমের যে সভা হয়েছিল, সে কথাও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
অন্যদিকে সামনেই বিধানসভা নির্বাচন আর তার আগে কংগ্রেসের আজকের কর্মশালার খসড়ায় বলা হয়েছে, “উন্নয়নের নিরিখে বামেদের ৩৪ ও তৃণমূলের ১৪ বছরে বাংলার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।” এই প্রসঙ্গে শুভঙ্করকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “বাংলায় কংগ্রেস চলে যাওয়ার পর কোনও শিল্পই হয়নি। আমরা কাউকেই সমালোচনার ঊর্ধ্বে রাখিনি। এর দায় বাংলার মানুষ কে নিতে হবে। বাইরে চলে যাচ্ছে বাংলার মানুষ। অথচ, তাদের ভোটে সরকার চলছে।”
এরপরই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের ‘জট’ সৃষ্টি হচ্ছে। যদিও একলা চলো নীতি নিলেও আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে জোট করলে শক্তিশালী দলের সঙ্গে জোট করতে চায় কংগ্রেস। তবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের দাবি, তৃণমূলের বিরুদ্ধে তারা লড়াই চালিয়ে যাবে। কারণ, এই রাজ্য সরকারের জনবিরোধী নীতি ও মানুষের প্রতি অত্যাচারের বিরুদ্ধে তাঁরা লড়বে। তবে এখনই প্রদেশ কংগ্রেস জোট নিয়ে ভাবছে না বলেও জানান তিনি।
এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক তথা প্রদেশ কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীর বলেন, “দেশজুড়ে কংগ্রেসের একটি প্রোজেক্ট। রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশ নিজেদের শক্তি বাড়াতে কী কী করা যায় তা নিয়ে আলোচনা। দলের শক্তি বাড়াতেই এই কর্মশালা। আমাদের সামনে দুটি রাজনীতিক দল। এই দুই সরকারে মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক। বেকারত্ব নিয়ে এই দুই সরকারের কোনও হেলদোল নেই। এরা শুধু রাজনীতিক ফায়দা তোলার জন্যই আছে। ২০২৬-এর নির্বাচনে আমরা যতটা পারি সাধারণ মানুষকে নিয়ে আমরা এগোব।”
উল্লেখ্য, বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেস সদস্যদের নিয়ে যে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল, সেই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক গোলাম আহমেদ মীর, প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী, প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, ইষা খান প্রমুখ।
Be the first to comment