কয়েক মাস আগে অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে প্রায় প্রতিনিয়ত শোনা যেত ‘বহিরাগত’ শব্দটি। বিজেপির ভিনরাজ্যের নেতাদের তোপ দাগতে এই শব্দটির প্রয়োগ শেষ পর্যন্ত লাভ এনে দিয়েছে তৃণমূলকে। বাংলার মানুষের মন কাড়ে ‘নিজের মেয়ে’। আর এবার ‘বাংলার মেয়ে’ মমতার সেই ‘বহিরাগত’ হাতিয়ার ব্যবহার করেই তৃণমূলকে তোপ দাগলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রথমে অসমের সুস্মিতা দেব এবং এখন গোয়ার লুইজিনহো ফেলেইরোকে রাজ্যসভায় পাঠাতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর তা নিয়েই এবার সরব শুভেন্দু।
প্রসঙ্গত, বাংলার নির্বাচনের বড় জয়ের পর থেকেই বিজেপি শাসিত বেশ কয়েকটি রাজ্যে চোখ পড়েছে তৃণমূলের। অসম, ত্রিপুরা, গোয়া তার মধ্যে অন্যতম। তবে সেই রাজ্যে সংগঠন এখনও সেই অর্থে মজবুত হয়নি ঘাসফুল শিবিরের। অবশ্য সেই রাজ্যের যেই নেতারা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের ‘মূল্য’ দিতে রাজ্যসভায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। সেই মর্মে প্রথমে সুস্মিতা দেব এবং পরবর্তীতে লুইজিনহোকে রাজ্যসভায় মনোনয়ন দিচ্ছে তৃণমূল। বাংলার থেকেই রাজ্যসভায় পাঠানো হয়েছে অসমের সুস্মিতাকে। আর এবার গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহোকেও বাংলার আসনেই মনেয়ন দিচ্ছে তৃণমূল। আর তৃণমূলের এই পদক্ষেপে না খুশ শুভেন্দু।
গতকালই তৃণমূল ঘোষণা করেছে যে অর্পিতা ঘোষের ছেড়ে যাওয়া রাজ্যসভা আসনে লুইজিনহো ফেলেইরোকে মনোয়ন দেবে তারা। আর সেই ঘোষণার পরেই টুইট করে তৃণমূলকে তোপ দাগেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্য, ‘বহিরাগতদের’ রাজ্যসভার আসন দিয়ে তা নষ্ট করছেন ‘বাংলার মেয়ে’। এই পদক্ষেপের কি জবাব দেবেন না বাঙালিরা? অসম বা গোয়া থেকে তৃণমূলের টিকিটে এই নেতাদের জেতা সম্ভব নয়। এই নেতাদের জন্য বাংলাকে কেন দাম দিতে হবে?
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে তৃণমূলে যোগ দেন ফেলেইরো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোয়া সফরের আগেই তাঁকে দলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি করা হয়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে রাজ্যসভায় ফেলেইরোকে পাঠিয়ে তৃণমূল গোয়ায় সংগঠন আরও মজবুত করার পরিকল্পনা করছে বলে রাজনৈতিক মহলের মত। আর ভিনরাজ্যে সংগঠন মজবুত করতে গিয়ে বাংলার জন্য সংরক্ষিত রাজ্যসভার আসন ভিনরাজ্যের নেতাদের দেওয়ায় বেজায় চটেছেন শুভেন্দু।
Be the first to comment