খড়দহে এক পরিবারের তিন সদস্য, দমদমে দুই ছাত্রী এবং তারপর আগরপাড়ায় আরও দুই প্রৌঢ়। একের পর এক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল রাজ্য। বৃহস্পতিবার মালদায় তিনজন, টিটাগড়ে একজন এবং মহিষাদলে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। জমা জল, খোলা বিদ্যুতের তার, এগুলির জন্য দায়ী কে? গাফিলতি কার? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সর্বত্র। প্রশাসন, বিদ্যুৎ দফতরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে এবার তীব্র আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রকাশ্যে হাতজোড় করে ক্ষমা চাওয়ার নিদেন দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। একইসঙ্গে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণের দাবিও জানালেন তিনি।
বৃহস্পতিবার শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আগামীকালের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে CESC কে। খড়দা এবং দমদম এলাকার মৃতের পরিবারপিছু ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। রাজ্য সরকারকেও সমপরিমাণ অর্থ সাহায্য করতে হবে। তা নাহলে আমরা জনস্বার্থ মামলা দায়ের করব।’ পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কেবলমাত্র আপনার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য, বিধায়ক পদ ধরে রাখার জন্য মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। প্রকাশ্যে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে হবে আপনাকে।’
অন্যদিকে, এদিনও দলত্যাগ বিরোধী মামলার শুনানিতে বিধানসভায় অনুপস্থিত ছিলেন মুকুল রায়। দুপুর একটা নাগাদ স্পিকারের ঘরে পৌঁছন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায় ও তাঁদের আইনজীবীরা। সেখানে আধঘণ্টা চলে শুনানি পর্ব। মুকুলের অনুপস্থিতিতে আগামী শুনানির দিন হিসেবে ১২ নভেম্বর ধার্য করেন স্পিকার। শুনানির বৈঠকে তাঁর না আসার কারণ জানিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন তৃণমূলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ। আর সেই চিঠিই মুকুল রায়কে তৃণমূলের পরিষদীয় দলের সদস্য প্রমান করবে বলে দাবি করলেন শুভেন্দু অধিকারী।
বিরোধী দলনেতার কথায়, ‘আমাদের তিনটি যুক্তি রয়েছে। প্রথমত, মুকুলবাবু যে তৃণমূল পরিষদীয় দলের সদস্য হয়েছেন, তার প্রমাণ আজ দিয়ে দিয়েছেন। ফলে দলত্যাগ-বিরোধী আইন এখনই কার্যকর করা দরকার। দ্বিতীয়ত, মুকুল নিজে আসতে না পারলেও চিঠি দিয়ে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে পারতেন। তৃতীয়ত, তৃণমূলের মুখ্য সচেতকের চিঠির সঙ্গে মুকুলের স্বাস্থ্য সম্পর্কে কোনও প্রামান্য নথি দেওয়া হয়নি।’
এদিন মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ দ্রুত খারিজের প্রসঙ্গে আইনি পদক্ষেপের কথা জানান শুভেন্দু। মণিপুর বিধানসভার একটি দলত্যাগ বিরোধী মামলার কথা উল্লেখ করে শুভেন্দু বলেন, ‘মণিপুর বিধানসভার একটি দলত্যাগ বিরোধী মামলায় আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিধানসভার স্পিকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্পিকার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত না নিলে আদালতের দ্বারস্থ হবে বিজেপি।’
শুভেন্দু জানিয়েছেন, আগামী সোমবার তাঁরা মুকুলের দলত্যাগের বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। আরও দুই দলত্যাগী বিধায়ক বিষ্ণুপুরের তন্ময় ঘোষ ও বাগদার বিশ্বজিৎ দাসের বিধায়ক পদ খারিজের জন্য ইতিমধ্যে স্পিকারের কাছে আবেদন করেছেন বিরোধী দলনেতা।
Be the first to comment