পুরভোটের প্রচারে বেরিয়ে নিজ গড়েই বাধা পেলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার কাঁথিতে দলীয় কর্মীর হয়ে প্রচারে বেরিয়ে ২১ নম্বর ওয়ার্ডে কনকপুর সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
ওইদিন বিজেপি প্রার্থী গোবিন্দ খাটুয়া হয়ে প্রচারে বেরিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। সেখানেই নির্বাচন উপলক্ষ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের একটি অস্থায়ী ক্যাম্প ছিল। সেই ক্যাম্পেই তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা নির্বাচনী কাজকর্ম পরিচালনা করতেন। শুভেন্দু সেখান থেকে যাওয়ার সময়েই রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে উদ্দেশ্য করে স্লোগান দিতে থাকেন তৃণমূল কর্মীরা।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। শুভেন্দু দেহরক্ষীরা তাঁকে জমায়েত থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সেইসময়েই মেজাজ হারান অধিকারী পুত্র। এক বিক্ষোভরত তৃণমূল সমর্থক ক্রোধান্বিত হয়ে তিনি বলেন, “এইসব কেন করছ? এসব করা কি উচিত! এসব করবে না। নির্বাচনী প্রচার সবাই চালাবে।”
পাল্টা, বিক্ষোভকারী তৃণমূল কর্মী সমর্থক রমেন মাইতি বলেন, “এত বোছর পরে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কথা মনে পড়ল ? আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামেই স্লোগান দিই। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে খেলার মাঠে দেখা হবে। তাঁর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীরকে কাউন্সিলর হওয়ার পর আর কোনদিন দেখা যায়নি। ঝড়-বৃষ্টিতে কোনদিনই এখানে আসছেন না। শুভেন্দু অধিকারী তো পুরো ডুমুরের ফুল ছিলেন!” এরপরেই আরও মেজাজ হারান শুভেন্দু। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন একপ্রস্ত বচসার পর নিজের গাড়িতে উঠে সেখান থেকে চলে যান তিনি।
ঘটনায় সৌমেন অধিকারী বলেন, “যার যেমন সংস্কৃতি! এ বিষয়ে কিছু মন্তব্য করব না। আমরা এই ২১ নম্বর ওয়ার্ডে জিতছি।” বস্তুত, এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার তৃণমূল সমর্থকদের বিক্ষোভের সম্মুখীন হয়েছেন শুভেন্দু। সোমবার, পুরভোটে তৃণমূলের বড় জয়ের দিন হাজরাতে বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আশুতোষ কলেজের পাশে শুভেন্দু অধিকারীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থক বলে পরিচিত পড়ুয়াদের একাংশ। বিরোধী দলনেতার নিরাপত্তারক্ষীরা কোনওভাবে শুভেন্দু অধিকারীকে উদ্ধার করে গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যান। কিন্তু, সেই বিক্ষোভে কার্যত দেখা যায়, বিরোধী দলনেতা তাঁর মেজাজ হারিয়েছেন।
এমনকী, কর্তব্যরত এক পুলিশ কর্মীর উপরে তাঁকে ‘চোটপাট’ করতেও দেখা যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী ও বিক্ষোভকারীদের একাংশ দাবি করেছেন ওই অধিকর্তাকে ধাক্কাও মেরেছেন বিজেপি বিধায়ক। তারপরেই গাড়িতে উঠে গিয়েছেন। আগে বিকাশভবনে তাঁর যাত্রাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। নেতাইয়ে যেতে গিয়েও আদালতের অনুমতি সত্ত্বেও তাঁকে বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। পুরভোটের আগে আগেই বিধাননগরে বিজেপির দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করার প্রতিবাদে থানা ঘেরাও অভিযানে গিয়ে ‘বিক্ষোভের’ সম্মুখীন হন শুভেন্দু। এমনকী, সিঙ্গুরে যেতেও তাঁকে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন খোদ অধিকারী পুত্র। তাঁর নিজ গড়ে কাঁথিতে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীকে দেখতে গিয়ে ‘তৃণমূলী বিক্ষোভের’ শিকার হয়েছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
Be the first to comment