“তৃণমূল নয়, তোলামূল।” এভাবেই সিঙ্গুর থেকে রাজ্যের শাসক দলকে আক্রমণ করলেন বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, “কেন্দ্রের থেকে টাকা নিয়ে রাজ্যের আলাদা নামে কাজ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেবল নাম বদলে কাজ করছেন তিনি”। আবার যে সিঙ্গুর থেকে তৃণমূল তার রাজনৈতিক ভিত মজবুত করেছিল সেখান থেকেই বিজেপির আন্দোলনের রোড-ম্যাপ তৈরি হল বলে জানালেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
বৃহস্পতিবার বিজেপির সিঙ্গুর ধরনা কর্মসূচির তৃতীয় দিন। কৃষকদের বিভিন্ন দাবিদাওয়ার সমর্থনে গত তিনদিন ধরে ধরনায় বসেছে গেরুয়া শিবির। আর শেষদিনে সাত দফা দাবি পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে তাঁরা যাবেন বলে হুঁশিয়ারি বিজেপি নেতাদের। আর দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের সামনে ধরনা মঞ্চ থেকে শুভেন্দু তাঁর ভাষণে বলেন, “থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্স করছে রাজ্য সরকার, সেই কারণে রাজ্যের কৃষকরা কোনও ক্ষতিপূরণ পায় না”। তাঁর অভিযোগ, এই ধরনা মঞ্চ তুলতে সবরকম চেষ্টা করছে তৃণমূল। বলেন, পরশু দিন কার্যত প্যান্ডেল ছাড়াই রাজ্য সভাপতি ধরনা মঞ্চে ছিলেন। তাঁর দাবি আন্দোলনের তীব্রতা ভয় ধরিয়ে দিয়েছে শাসকের মনে।
তাঁর কথায়, “নবান্নের চোদ্দ তলায় যিনি মালিক বসে আছেন, প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি যিনি চালাচ্ছেন, যিনি ভাইপোকে এনে এই রাজ্যপাট তুলে দিতে চান, যাঁর ভাতৃবধূ সমাজসেবা করে মাত্র পাঁচ কোটি টাকা করেছেন, সেই মমতা ব্যানার্জি কৃষকদের স্বভিমানের কথায় মাথায় রেখে তাঁর পুলিশকে বলে দিলেন তোমরা দু তিনশো মিটার পিছিয়ে যাও।”
শুভেন্দু আরও যোগ করেন, “এই মঞ্চটা যদি ভাঙি তাহলে কৃষকের মাথা ভাঙা হবে। এঁদের যদি আটকে দিই তবে কৃষকদের আটকে দেওয়া যাবে। আর আমি তো ২০১১ সালে এসেছিলাম কৃষকদের কথা বলে, নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুরের কথা বলে।” তাঁর দাবি, তবু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর তাঁর পুলিশ পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছে। ধরনা মঞ্চ থেকে শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, এই তো সবে শুরু। আমি গাঁয়ের ছেলে। বীজ যখন আমরা আমন হোক বা বোরো, আলু যখন লাগাই, তার আগে আমাদের আগুয়া চিরতে হয়। আজ এই আন্দোলনের আগুয়া চেরা হল। ভাববেন না এখানেই শেষ হল। এবার আমরা বীজটা ছড়াব। তার পর জল দেব। আবর্জনা সাফ করা হবে। প্রয়োজনে কীটনাশক দেব। তার পর তো ফলটা ফলবে।”
তৃণমূলকে কটাক্ষ করে তোলামূল বলে শুভেন্দুর দাবি, ইন্সুরেন্স কোম্পানির জন্য কোনও টেন্ডার হয় না। কিছু সংস্থাকে এই সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “কৃষকদের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় করিয়ে আমার ছাড়ব। যদি ভোট লুঠ করা হয়, গোটা রাজ্যে রাস্তার উপরে বসে পড়তে হবে।” শুভেন্দুর দাবি, সিঙ্গুর থেকেই শুরু হল আন্দোলনের রোড-ম্যাপ। সেই রোড-ম্যাপে নবান্নের চোদ্দ তলাকে কীভাবে নড়াতে হয়, কৃষকরা সেটা জানে।
Be the first to comment