ফের শুভেন্দু অধিকারীর মুখে উঠে এলো ‘তোলাবাজ ভাইপো’র প্রসঙ্গ। শনিবারের পর মঙ্গলবার আরও একবার ‘তোলাবাজ ভাইপো হটানো’র কথা বললেন তৃণমূল কংগ্রেস থেকে সদ্য বিজেপিতে আসা পূর্ব মেদিনীপুরের এই ভূমিপুত্র।
এদিন পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে বিজেপির হয়ে এই প্রথমবার সভায় অংশগ্রহণ করেন শুভেন্দু। সেই সভা থেকেই শুভেন্দু বললেন, তোলাবাজ ভাইপোর হাত থেকে বাংলাকে বাঁচাতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে সরাসরি আক্রমণ করে শুভেন্দুর বক্তব্য, দলটা কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। আত্মসম্মান থাকলে কেউ তৃণমূল কংগ্রেসে থাকতে পারবে না।
শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের দূরত্ব যে তৈরি হচ্ছিল, তা গত কয়েকমাস ধরে বোঝা যাচ্ছিল। কিন্তু একবারও শুভেন্দুর মুখে দল বিরোধী কোনও কথা শোনা যায়নি। তার পর ধাপে ধাপে মন্ত্রিত্ব, সরকারি বিভিন্ন পদ ও বিধায়ক পদ ছেড়ে তৃণমূল ত্যাগ করেন কাঁথির অধিকারী পরিবারের মেজ ছেলে।
গত শনিবার বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের হাত ধরে যোগদান করেন গেরুয়া শিবিরে। সেদিন তিনি মঞ্চে দাঁড়িয়ে স্লোগান তুলেছিলেন, “তোলাবাজ ভাইপো হটাও। আর মঙ্গলবার পূর্বস্থলীর মঞ্চ থেকে শুভেন্দু চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেস ও ওই দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
শুভেন্দুর বক্তব্য, “বিজেপির আশ্রয় না পেলে তৃণমূল কংগ্রেস দলটাই উঠে যেত।” আর এই কথা তিনি মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন দলের সেই নেতাদের যাঁরা ইদানীং তাঁকে ‘মীরজাফর’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর সাফ কথা, “শুভেন্দু বেইমান নয়।”
কেন তিনি এই কথা বলেছেন, সেই ব্যাখ্যাও তিনি এদিন উপস্থিত বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ১৯৯৮ সালে ততকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে ছিলেন। তমলুকে লক্ষ্মণ শেঠের বিরুদ্ধে যখন লোকসভা নির্বাচনে লড়েছিলেন শুভেন্দু, তখন তৃণমূল ও বিজেপির জোট ছিল। সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে শুভেন্দু জানান, তিনি তখন এনডিএ-র প্রার্থী ছিলেন।
একই সঙ্গে শুভেন্দুর দাবি, ২০১১ সালে বামফ্রন্ট সরকারকে হটানোর পিছনে বিজেপিরও ভূমিকা ছিল। বিজেপিও তৃণমূলের পিছনে ছিল। কিন্তু এবার পরিবর্তনের পরিবর্তন দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। বিজেপিকে জেতানোর আহ্বান জানিয়ে শুভেন্দুর বক্তব্য, তোলাবাজি বন্ধ করা হবে। সোনার বাংলা গড়া হবে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে কিডনি পাচারও বন্ধ হয়ে যাবে।
তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক নেতা বলছেন যে পদের লোভে শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এদিন এই সমালোচকদেরও জবাব দিয়েছেন শুভেন্দু। জানিয়েছেন, তিনি সব পদ ছেড়ে এসেছেন। বিধানসভা ভোটে প্রার্থী না করা হলেও ২০ ঘণ্টা রোজ দলের খাটবেন।
মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর সভায় উপস্থিত রয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া কালনার বিধায়ক বিশ্বজিত কুণ্ডুও। দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বেই যে তিনি লড়াই করবেন, সেই কথাও এদিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী।
Be the first to comment