বিধানসভার অধিবেশনে সোমবার ইডি-সিবিআই-এর ‘অতিসক্রিয়তা’প্রতিবাদে প্রস্তাব পাঠ করে রাজ্যের শাসক দল। পাল্টা এর বিরোধিতা করে বিজেপি শিবিরও। প্রস্তাবের পক্ষে ও বিপক্ষে ভোটাভুটি হয়। পক্ষে ভোট যায় ১৮৯ টি এবং বিপক্ষে ভোট যায় ৬৪ টি। এরপর বিধানসভার অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর সাফ কথা, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে লড়াই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি করছে, তাদের কাজের উপর এই প্রস্তাব কোনও প্রভাব ফেলবে না।” যদিও এই একই কথা শুভেন্দু বাবু এর আগেই বিধানসভার ভিতরেও বলেছেন। সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু বলেন, “সিবিআই ও ইডির যে ক্ষমতা ও কার্যপদ্ধতি রয়েছে, তা সংবিধান নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। ২০২২ সালের ২৭ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট ইডিকে যে অধিকার দিয়েছে, তা কোনওভাবে প্রভাবিত হবে না। পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষ সচেতন, সংবিধান জানেন।”
বিরোধী দলনেতা এদিন আরও বলেন, “আমাদের ৬৬ জন বিধায়ক এসেছিলেন। দুই জন নিজস্ব কাজের জন্য চলে মধ্যাহ্নভোজের জন্য চলে গিয়েছিলেন। আমাদের ৬৪ জন প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। এখানে পুরোটাই ওপেন ব্যালট। সিক্রেট ব্যালট নয়। সিক্রেট ব্যালট হলে হয়ত অনেক ক্রস ভোট হত। যেমন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় হয়েছিল।” সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে গেলেন শুভেন্দু অধিকারী। বললেন, “২০১৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিবিআইকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি প্রত্যাহার করে নেন। অর্থাৎ, সিবিআই এই রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা যেমন রেল, পোর্ট, বিমানবন্দর, এইমস… এই সব জায়গা ছাড়া অন্যান্য জায়গায় তদন্ত করতে গেলে, রাজ্য সরকারের অনুমোদনের বিষয়টি তিনি প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। অর্থাৎ, সিবিআই যাতে স্বতোঃপ্রণোদিতভাবে এফআইআর করতে পারে, তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল।”
কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে ব্যবহার করার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে তুলে আসছে তৃণমূল। এদিন বিধানসভার অন্দরে এই নিয়ে প্রস্তাবও আনা হয়েছে। এই বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারী সিবিআই-এর নিরপেক্ষতা বোঝাতে গিয়ে বলেন, “সিবিআই ডিরেক্টর বাছাই প্রক্রিয়া রাজনৈতিকভাবে হয় না। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি থাকেন সেখানে, প্রধানমন্ত্রী সভাপতিত্ব করেন। ২০২১ সালের ৫ মে-র পর থেকে যে ১৫ টি সিবিআই তদন্ত রাজ্যে চলছে, তার কোনওটির সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার বা বিজেপির কোনও যোগ নেই। সবই আদালতের নির্দেশে হচ্ছে।”
কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি নিয়েও এদিন রাজ্য সরকারকে খোঁচা দেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, “আজ একজন উপাচার্য গ্রেফতার হয়েছেন। কার থেকে শিখবে ছেলেমেয়েরা? এর কয়েকদিন আগে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় গ্রেফতার হয়েছেন। দশ বছর ধরে ৮০-৯০ লাখ ছাত্রছাত্রীর কাছে তাঁর সার্টিফিকেট গিয়েছে, যদি গড়ে প্রতি বছর ৯ লাখ পাশের সংখ্যা ধরা হয়। এদের মার্কশিটে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের সই গিয়েছে।”
Be the first to comment