জল্পনার অবসান। অনুমতি মিলেছে ছেলের। আগামী ২৪ মার্চ কাঁথিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রচার সভায় হাজির থাকবেন তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী। বুধবার জানিয়ে দিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে, সেদিনই বর্ষীয়ান সাংসদ পদ্ম পতাকা হাতে নেবেন কিনা তা স্পষ্ট করা হয়নি। তবে, ভোটের আগে মেদিনীপুরের অধিকারী পরিবারে পদ্ম পাপড়ি ফোটার আভাস ক্রমশ উজ্জ্বল।
শুভেন্দুর দলবদলের পর থেকে বয়সের কারণ দেখিয়ে অশীতিপর শিশিরকে দলের একাধিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল। বদলে দলীয় রাজনীতিতে অধিকারীদের বিপক্ষ শিবিরের নেতাদের দলের নানা সাংগঠনিক পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কাঁথিতে প্রচারে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করে চড়া সুরে আক্রমণ সানান যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। যা আদতে বর্ষীয়ান সাংসদকেই কদর্য আক্রমণ বলে তুলে ধরছে গেরুয়া বাহিনী। এরপর নন্দীগ্রামের মতো হাইভোল্টেজ কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়তে শুভেন্দুকে প্রার্থী করে বিজেপি।
তারপরই শিশিরবাবু ছেলের হয়ে প্রচারের কথা জানিয়েছিলেন আকারে-ইঙ্গিতে। নন্দীগ্রামে তৃণমূল পরাজয় একপ্রকার নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন তিনি।
দিন কয়েক আগেই বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় কাঁথিতে শিশির অধিকারীর বাড়িতে গিয়ে মধ্যাহ্নভোজন সারেন। সেখানেই বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদকে মোদীর সভায় উপস্থিত থাকার কথা জানিয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর।
রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক কাঁথির অধিকারী পরিবারের। প্রায় দু’দশকের সম্পর্ক ছিন্ন করে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছাড়লেও বাবা শিশির অধিকারী, ভাই দিব্যেন্দু ও সৌমেন্দু – সকলেই ছিলেন রাজ্যের শাসকদলের সদস্য। পরে কাঁথি পুরসভার প্রশাসক হিসাবে সৌমেন্দুকে সরিয়ে দেওয়া কেন্দ্র করে তৃণমূল ছাড়েন সৌমেন্দু। যোগ দেন বিজেপিতে। এবার মেজো ছেলের হাত ধরে বাবা শিশির অধিকারীও দলবদলও প্রায় নিশ্চিত। শিশির অধিকারীর এদিনের মন্তব্যেই তা স্পষ্ট।
বর্ষীয়ান সাংসদ বলেছেন, ‘যে দিন থেকে শুভেন্দু বিজেপিতে গিয়েছে, সেই সময় থেকেই আমার বাপ-ঠাকুরদা-চোদ্দ পুরুষ তুলে গালাগালি করা হয়েছে। মীরজাফর, বেইমান বলা হচ্ছে! জানি না, আমরা কার খেয়েছি, কার ভোগ করেছি। যে যাই বলুক, মেদিনীপুরের লোক জানে আমরা ভোগী না ত্যাগী।’
তৃণমূল তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে দাবি করেছেন কাঁথির সাসংদ। তাঁর কথায়, ‘এখানে গভীর বন্দর করবে বলেছিল। করেনি। দু’দিন আগে জাহাজ মন্ত্রী এসে বলেছেন, বন্দর করে দেব। নিতিন গডকড়ি এসেও একই কথা বলেছেন। আমি গভীর বন্দর চাই। যেখানে আমাদের ঘরের ছেলেমেয়েদের চাকরি হবে। রাজ্য সরকার বলেছিল গভীর বন্দর করবে, কিন্তু তা তো করতে পারবে না। ছোট বা মাঝারি বন্দর করতে পারবে। তাতে আমাদের কী হবে? পুরোটাই প্রতারণা।’
Be the first to comment