মঙ্গলবার রাত তখন সওয়া ৯ টা। ছেলে শুভ্রাংশুকে ভেন্টিলেশন থেকে বের করে তার ঘন্টা কয়েক আগে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে। এতক্ষণে তবু কিছুটা যেন স্বস্তির ভাব বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের। যদিও দেখে বোঝা যাচ্ছে, গত চব্বিশ ঘন্টায় ঝড় বয়ে গিয়েছে তাঁর উপর। বউমা শর্মিষ্ঠা কিছুক্ষণ আগে হাসপাতাল থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। এ বার স্ত্রীকেও ফোনে ধরে বললেন, “আর চিন্তা কোরো না, তোমার ছেলের বিপদ কেটে গিয়েছে।”
মুকুলবাবুর ছেলে তথা বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় গত সোমবার রাত থেকেই গুরুতর অসুস্থ। সে দিন রাত ১০ টা নাগাদ হঠাত শুভ্রাংশুর বমি হয়। বমির সঙ্গে বেরিয়ে আসে প্রচুর রক্তও। পুরুলিয়ায় নিহত বিজেপি কর্মীদের বাড়ি যাওয়ার জন্য তখন মাঝ রাস্তায় মুকুলবাবু। বর্ধমানের কাছাকাছি। ছেলের খবর পেয়ে তখনই গাড়ি ঘুরিয়ে পৌঁছে যান বাড়িতে। তার পর রাত সাড়ে ১২ টা নাগাদ প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় শুভ্রাংশুকে ভর্তি করা হয় অ্যাপোলো হাসপাতালে।
আগে থেকে খবর পেয়ে বিশিষ্ট গ্যাস্ট্রোএন্টেরলজিস্ট ডাঃ মহেশ গোয়েঙ্কা মাঝ রাতেই পৌঁছে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে বলা হচ্ছে, রাতেই শুভ্রাংশুর এন্ডোস্কোপি করেন ডাক্তাররা। সেই সঙ্গে আনুসঙ্গিক আরও পরীক্ষা নিরীক্ষার পর মেডিকেল বোর্ড ডেকে আলোচনা করে চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন, রক্তে অতিরিক্ত সুগার থেকেই শুভ্রাংশুর যকৃৎ আক্রান্ত হয়েছে। সেই মোতাবেক মঙ্গলবার সকাল থেকে চিকিৎসা শুরু হয় বীজপুরের বিধায়কের। তার পর বিকেলে তাঁকে ভেন্টিলেশন থেকে বাইরে আনা হয়। যদিও এখনও আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে শুভ্রাংশুকে। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে।
শুভ্রাংশুর অসুস্থতার খবর পেয়ে গতকাল তাঁকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলে একদা তাঁর সতীর্থরাও অনেকে ফোন করে খোঁজ খবর নেন শুভ্রাংশুর। খোঁজ খবর নেন বিজেপি নেতারাও। বুধবার শুভ্রাংশুকে দেখতে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র হাসপাতালে যাওয়ার কথা।
Be the first to comment