চিঠি পাঠিয়েছিল সিবিআই। ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী, রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের সচিব মানিক মজুমদারকে। দিনের দিনই সিবিআই অফিসে হাজিরা দিতে গেলেন দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ সুব্রত বক্সী। সোমবার দুপুরে তিনি সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে আসেন।
কয়েক দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ঠিকানায় সিবিআই মানিক মজুমদারের নামে চিঠি পাঠিয়েছিল। চিঠি গিয়েছিল ডেরেক এবং বক্সীর কাছেও। সিবিআই সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ছবি বিক্রি করে যে টাকা তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’-র তহবিলে গিয়েছিল, সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই পরপর তারিখ বেঁধে ডাকা হয়েছে এই তিনজনকে।
কেন জেরা?
বছর আটেক আগে মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবির একটি প্রদর্শনী হয়েছিল। জানা গিয়েছে, সেখানে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গেই ছবি ক্রেতাদের তালিকায় নাম রয়েছে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার একাধিক আধিকারিকদের। যেহেতু এই তিনজন নেতা দলের তরফে মুখপত্রের তহবিলের হিসেব রক্ষণাবেক্ষণ করেন, তাই তাঁদেরকেই ডেকেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
প্রসঙ্গত, বেশ কয়েক মাস ধরেই এই ছবি সংক্রান্ত ব্যাপারে তদন্তে অগ্রসর হওয়ার জন্য পা ফেলছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। এর মধ্যে একাধিকবার জেরা করেছেন ব্যবসায়ী শিবাজি পাঁজাকে। বেশ কয়েকজন পুলিশ আধিকারিককেও গোয়েন্দারা ডেকেছেন বলে খবর।
ইতিমধ্যে, একাধিকবার তৃণমূলের তরফে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে ব্যবহার করার অভিযোগ তোলা হয়েছে বিজেপি-র বিরুদ্ধে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো সিবিআই-কে বিবিআই (বিজেপি ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন) বলেও কটাক্ষ করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ঠিকানায় সিবিআই নোটিস পাঠানোর পরও দলের নেতারা একই কথা বলেছিলেন। মাঝে অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন, শীতঘুম দিয়েছে সিবিআই। যদিও পুজোর আগে থেকেই গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে তদন্তকারী সংস্থা। কুণাল ঘোষ, আসিফ খানদের জেরা করার মধ্যে দিয়ে ওয়ার্মাআপও সেরে নেয়। কিন্তু পুজোর পরই সিবিআই-এর গৃহযুদ্ধে ফের থমকে যায় তদন্ত। কিন্তু এ বার বছরের শেষ মাসে এসে রাজ্যের শাসক দলের একেবারে শীর্ষস্তরের নেতাদের জেরায় ডাকতে শুরু করল সিবিআই। এখন দেখার চিটফান্ড তদন্ত বাংলায় নতুন রাজনৈতিক মোড় নেয় কি না।
Be the first to comment