বিধানসভায় সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ধনখড়-শুভেন্দুর

Spread the love

 হাসপাতাল থেকে শুক্রবারই ছাড়া পাওয়ার কথা ছিল রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। কিন্তু, তার আগেই নিভে গেল প্রদীপ। কালীপুজোর রাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার রাতে SSKM হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগ থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় তপসিয়ার পিস হাভেনে। সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় রবীন্দ্র সদনে। বিকেলে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

তাঁর শেষযাত্রায় থাকবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সুব্রতদার মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। আমি শেষকৃত্যে থাকব না। ওঁর মরদেহ আমি দেখতে পারব না।’ ‘দাদা’ সুব্রতের প্রয়াণে মুখ্যমন্ত্রী শোকস্তব্ধ। কেওড়াতলা মহাশ্মশানে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গান স্যালুটে বিদায় জানানো হবে রাজ্যের মন্ত্রীকে। উপস্থিত থাকবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

সকাল ১০টার কিছু আগে পিস হাভেন থেকে মরদেহ বের করা হয়। এরপর রবীন্দ্র সদনের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের দেহ। ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে তাঁর শববাহী শকট। রবীন্দ্র সদনে শায়িত রয়েছে তাঁর নশ্বর দেহ। সেখানে উপস্থিত হয় হয়েছেন রাজনৈতিক জগতের সহকর্মীরা। ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেন, দেবাশিস কুমার, তাপস রায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মালা রায়, শশী পাঁজা, মদন মিত্র, মুনমুন সেন-সহ তৃণমূলের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব উপস্থিত রয়েছেন রবীন্দ্র সদনে। আসেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সীও।

এদিন দুপুর ২টো পর্যন্ত রবীন্দ্র সদনেই শায়িত থাকবে সুব্রতর দেহ। তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন শুভানুধ্যায়ী ও অনুরাগীরা। দুপুর ২টোর পর সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে বিধানসভায়। মাত্র ২৬ বছর বয়সে বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে ভোটে জিতে প্রথমবার বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। তাই স্মৃতির সেই বিধানসভায় রাখা থাকবে তাঁর দেহ। তারপর তাঁর বালিগঞ্জ কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গায়। তারপর সেখান থেকে মন্ত্রীর বাড়ি। সেখান থেকে একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাবে যাবে তাঁর দেহ। কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের শেষকৃত্য হবে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে রাজ্য সরকারের সমস্ত দফতরে শুক্রবার অর্ধনমিত থাকবে জাতীয় পতাকা।

ইতিমধ্যেই সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের একডালিয়ার বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন প্রতিবেশী এবং পরিজনরা। প্রিয় নেতাকে শেষবারের মতো দেখতে সকলেই জড়ো হয়েছে তাঁর বাড়িতে।

শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মৃতিচারণ বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের। তিনি বলেন, ‘দলমত নির্বিশেষে সুব্রতদার সঙ্গে সকলের ভালো সম্পর্ক ছিল। অত্যন্ত রসবোধের একজন মানুষ। তিনি ছিলেন একজন মুখ্যমন্ত্রী মেটেরিয়াল। তাঁর মৃত্যুতে সেই বৃত্তটা আর সম্পূর্ণ হল না।’ রবীন্দ্র সদনে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন রাজ্যের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা, জিতেন্দ্র তিওয়ারি। আসেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিক। শ্রদ্ধা জানিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘সুব্রতদা ছিলেন গ্র্যান্ডফাদার অফ বেঙ্গল পলিটিক্স।’ পাশাপাশি, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। শোকবার্তায় তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা খুব ভাল এবং যোগ্য এক জন নেতাকে হারালাম। ৩৫ বছরের বেশি সময় ধরে আমি তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম। খুব বড় ক্ষতি হয়ে গেল।’

রবীন্দ্র সদনে সুব্রত মুখোপাধ্য়ায়কে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। উপস্থিত হন সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেব, অশোক ঘোষ, বিকাশ ভট্টাচার্য সহ অন্যরা।

বেলা ২টো নাগাদ রবীন্দ্র সদন থেকে বেরিয়ে বিধানসভার উদ্দেশে রওনা দেয় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মরদেহ। বিধানসভার অলিন্দে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য শায়িত থাকবে তাঁর দেহ। বিধানসভায় শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিধানসভায় তাঁকে শ্রদ্ধা জানান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*