সামনে পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচন। তবে সবার নজর পশ্চিমবঙ্গে। জাতীয় নির্বাচনও যে পশ্চিমবঙ্গের ভোটে বাড়তি নজর দিচ্ছে তা ডেপুটি নির্বাচন কমিশনারের দ্বিতীয় সফরে পরিষ্কার। প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন চলতি মাসের মধ্যেই আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত অসমাপ্ত কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সংগঠিত করতে সবরকম পদক্ষেপ করবে নির্বাচন কমিশন। প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কর্তব্যে ন্যূনতম গাফিলতি হলে রেয়াত করা হবে না।
প্রশাসনিক মহলের মতে নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ বা ভোট পরিচালনায় যুক্ত কোনও আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে কমিশন আগে তাঁকে শোকজ করত। যথাযথ উত্তর না পেলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নিত করত কমিশন। কিন্তু এবাররের নির্বাচনের আগে প্রত্যেকের উপরে নজর এতটাই জোরালো যে, ন্যূনতম গাফিলতি হলে কমিশন সরাসরি সংশ্লিষ্ট অফিসারকে শাস্তি দিতে পারে বলে একপ্রকার বুঝিয়ে দিয়েছেন সুদীপ জৈন।
নির্বাাচন কমিশন সূত্রে খবর, জামিন-অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি, সেই প্রশ্ন তোলেন জৈন। নির্দেশ দেন, দু’-এক সপ্তাহের মধ্যেই ওই সব পরোয়ানা কার্যকর করার নির্দেশ দেন তিনি। অতি স্পর্শকাতর, স্পর্শকাতর বুথের তালিকা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন সুদীপ জৈন । ২০১৩ এবং ২০১৯ সালের নির্বাচনের হিংসার তথ্য তুলে ধরে হিংসায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশও দেন।
পুলিশ সুপার ও পুলিশ কমিশনারদের জৈন কড়া বার্তা দিয়েছেন। বলেছেন, নির্বাচনে হিংসা নিয়ন্ত্রণের কাজে গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না। হিংসা রুখে অবাধ, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে প্রয়োজনে কমিশন কড়া পদক্ষেপ করবে। প্রতি সপ্তাহে অপরাধ এবং আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত তালিকা তৈরির উপরে জোর দেওয়ার পাশাপাশি আর্থিক লেনদেনের দিক থেকে স্পর্শকাতর এলাকাগুলিকেও চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রেকর্ড সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন সংগঠিত করতে চাইছে কমিশন । কোভিড আবহে কমিশনের সিদ্ধান্ত, এ বার ভোটকেন্দ্রে সর্বাধিক ১০৫০ জন ভোটার থাকবেন । রাজ্যে বুথ রয়েছে ৭৮ হাজারের কিছু বেশি । প্রশাসনিক সূত্রের ধারণা, নতুন বিধিতে কমবেশি ২৯ হাজার বুথ বাড়বে । সেই অনুযায়ী বাড়বে ভোটকর্মী, নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যাও ।
কোরোনা পরিস্থিতিতে ভোটাররা যাতে সরকারি নিয়ম ও বিধি মেনে চলেন , তার উপর নজর রাখতে বলা হয়েছে । প্রয়োজনে জেলাশাসকদের সশরীরে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে । নির্বাচনের কাজে যুক্ত কোনও কর্মী-অফিসারদের গাফিলতির অভিযোগ উঠলে তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ করার নির্দেশও দিয়েছেন জৈন ।
Be the first to comment