
বিগত কিছুদিন ধরেই রাজ্যপালের সঙ্গে শাসকদলের সংঘাত চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সোমবার শীতকালীন সংসদীয় অধিবেশনের প্রথম দিনে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের বিরুদ্ধে রাজ্যসভায় সরব হলো তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় এদিন কোনও রাখঢাক না রেখেই রাজ্যপাল রাজনীতি করছেন বলে অভিযোগ করেন। রাজনীতি করলে রাজ্যপালকে রাজভবন ছাড়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার এই সাংসদ।
প্রসঙ্গত, সোমবার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই রাজ্যপালের বিষয়টি তোলেন সুখেন্দুশেখর বাবু। এদিন তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যের রাজ্যপাল সরাসরি রাজনীতি করছেন। কেন্দ্রের হয়ে কাজ করছেন। রাজনীতি চাইলে তিনি করতেই পারেন। তবে রাজ্যপাল আপনি যদি রাজনীতি করেন তবে রাজভবন ছাড়ুন।
প্রসঙ্গত, গত রবিবারই রাজ্যপালের আচরণে যে শাসকদল ক্ষুব্ধ তা বেশ টের পাওয়া যাচ্ছিল। রবিবার শীতকালীন অধিবেশন শুরুর আগে একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়। সেখানেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অসন্তোষের কথা জানান তৃণমূলের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিষয়ে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখাও করেন। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের কার্যকলাপে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় ভাবমূর্তি ধ্বংস হচ্ছে বলে অভিযোগ জানায় তৃণমূল নেতৃত্ব। অবিলম্বে নয়াদিল্লিতে ডেকে পাঠিয়ে তাঁর আচরণের কৈফিয়ৎ চাওয়ার বিষয়েও অমিত শাহকে জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো অনুযায়ী কেন্দ্রই বিভিন্ন রাজ্যে রাজ্যপাল নিয়োগ করে থাকে। সে ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা থাকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। রবিবার তাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সামনে রাজ্যপালকে নিয়ে অভিযোগ জানানোর বিষয়টিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। তৃণমূলের সংসদীয় দলের পক্ষ থেকে বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করেন লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন।
সোমবার সংসদে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এমন মন্তব্যের পরেই সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলকে পাল্টা জবাব দেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সংবিধানই আমাকে কেন্দ্রের এজেন্ট হিসাবে কাজ করার এক্তিয়ার দিয়েছে। এদিন আক্ষেপের সুরে রাজ্যপালকে বলতে শোনা যায়, মুখ্যমন্ত্রীকে বহুবার চিঠি লিখেও তাঁর জবাব পাইনি। মুখ্যসচিবও আমার সঙ্গে দেখা করেননি। এর আগেও রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠির বিরুদ্ধেও নানা সময়ে বহু অভিযোগ এনেছিল শাসকদল। কিন্তু, রাজ্যপালের বিষয় নিয়ে সংসদে সরব হওয়ার বিষয়টি কার্যত নজিরবিহীন।
এদিন কী বললেন তিনি?
শুনুন!
Be the first to comment