মার্কিন সেনেটে তখন চলছে গুগলের বিরুদ্ধে শুনানি। মঙ্গলবার বিচারপতির সামনে শান্ত গলায় বক্তব্য রাখছেন গুগল সিইও সুন্দর পিচাই। তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছের মানুষরা। গুগলের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতাকে প্রশ্ন করে অভিযোগ ছুটে আসছে একে একে। সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেই পিচাই জানালেন, “গুগল বরাবর নিরপেক্ষ। কোনওররকম রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব গুগল করেনি, করবেও না। সমস্ত অভিযোগই যুক্তিহীন।”
গুগলের বিরুদ্ধে রিপাবলিকানদের একাংশের অভিযোগ, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে না কি মজা করে গুগল। তাঁর বক্তব্য ও ছবিকে অযথা বিকৃত করা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক ভাবমূর্তি এতে নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি । আত্মপক্ষ সমর্থনে পিচাই জানান, “গুগল ডান বা বাম রাজনীতি বোঝে না। বাস্তব পরিস্থিতিকে বিচার করে। সেই অনুযায়ী সার্চ অপশনে তথ্য সাজায়। এখানে কোনও ব্যক্তি বা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট গুরুত্ব পায় না।” পাশাপাশি, সাম্প্রতিক ঘটনা, ব্যক্তির জনপ্রিয়তাকে গুগল গুরুত্ব দেয় বলেও তিনি জানান। আসল খবর ও তথ্যই মানুষকে দেওয়া গুগলের কাজ। সেখানে আলাদা করে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে নির্দিষ্ট করাটা অনুচিত বলেই দাবি করেন পিচাই।
গুগলের নিরপেক্ষতা নিয়ে পিচাইকে প্রশ্ন করেন মার্কিন হাউস জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান বব গুডল্যাটে। যিনি শুনানির প্রথম থেকেই আমেরিকানদের গুরুত্ব দিয়ে প্রশ্ন করা শুরু করেন। সেই প্রশ্নকেই হাতিয়ার করেন পিচাইয়ের আইনজীবী। গুগল সিইও-কে গুডল্যাটে বলেন, গুগল যদি সার্চ ইঞ্জিনে তথ্য বিকৃত করে, সেটা খুবই খারাপ ব্যাপার। অনলাইনে তথ্য নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আছে বলে গুগলের সেটা করা উচিত নয়। অনলাইনে কোন কোন তথ্য তাঁরা পাচ্ছেন না, সেটা জানার অধিকার আমেরিকানদের আছে।
পিচাইয়ের আইনজীবীর পাল্টা জবাব, “গুগল আমেরিকা ও সে দেশের মানুষকে সম্মান করে। তবে পৃথিবীর সব মানুষই গুগল সার্ফিং করেন। সেই দিকে নজর দিয়েই সবরকমের তথ্য, ছবি নিয়ে প্রতিদিন হাজির হতে হয়। যে কোনও একজন ব্যক্তি বা দেশকে গুরুত্ব দেওয়া গুগুলের কাজ নয়।”
গুগলের তথ্য কতটা সত্যি, সেই প্রশ্নের মুখেও পড়েন পিচাই। জবাবে তিনি বলেন, “যে প্রযুক্তি গুগল ব্যবহার করে তাতে অসত্য ঘটনা ছড়ানোর সুযোগ নেই। যাচাই করা তথ্য, ঘটনাকেই সামনে এনে মানুষকে সচেতন করা গুগলের কর্তব্য।” কিছু ত্রুটির কথা স্বীকারও করেছেন তিনি। বিশেষ করে স্মার্ট ফোনে গুগল ইনস্টলে আরও সচেতন হওয়ার প্রয়োজনকে গুরুত্ব দেন পিচাই।
পাশপাশি, শুনানি শেষে জানান, গুগল তার মার্কিন শিকড়কে কোনওদিনই ভোলেনি। আমেরিকার বাজার চাঙ্গা রেখেই বিভিন্ন দেশে গুগল ছড়িয়ে পড়ছে। যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট মনে রাখলে তিনি খুশি হবেন।
Be the first to comment