মুজফ্ফরপুর শেল্টার হোম মামলায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ও সরকারকে তীব্র ভর্ত্সনা করল সুপ্রিম কোর্ট৷ মঙ্গলবার শুনানি চলাকালীন এই মামলায় বিহার সরকারের নিন্দা করে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, সরকারি ভূমিকা খুবই অমানবিক ও দুর্ভাগ্যজনক৷ মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের উদ্দেশ্যে সুপ্রিম কোর্টের ধমক, ‘আপনাদের লজ্জা করে না!’ এ দিন বিহার সরকারের মুখ্য সচিব শুনানি চলাকালীন হাজির ছিলেন৷ তাঁকে শীর্ষ আদালত জিগ্গেস করে, অপরাধ যখন হয়েছে, তা হলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কেন ৩৭৭ ধারা ও পকসো অ্যাক্টে মামলা করা হয়নি? সদুত্তর দিতে পারেননি মুখ্যসচিব৷
এরপরই ধমকের সুরে আদালত বলে, ‘আপনারা করছেন কি? লজ্জার ঘটনা৷ এতগুলি শিশুর সঙ্গে এরকম নৃশংস অত্যাচার হল, আপনারা কিছু বললেন না? কী করে এতটা অমানবিক হন আপনারা?’
এরপরই সুপ্রিম কোর্ট বিহার সরকারকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে, ‘যদি আমরা জানতে পারি, যে মজফ্ফরপুরে পসকো বা ৩৭৭ ধারায় কোনও অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, আর আপনারা এফআইআর দায়ের করেননি, তা হলে আমরা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব৷’ মুখ্যসচিবকে সুপ্রিম কোর্ট বলে, আপনি এত দিন যা যা করেছেন এই মামলায়, তা জাস্টিফাই করুন৷
গত মে মাসে মুজফ্ফপুরের সরকারি হোমে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। এ মাসের গোড়াতেই ২১ জন আবাসিককে উদ্ধার করে পুলিশ। পাশাপাশি, হোমের মাটি খুঁড়ে তল্লাশি চালানো হয়। ধর্ষণের অভিযোগে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিককেও এ দিন গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া আবাসিকদের মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়। ১৬ জনকে নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে।
বিহারের হোমগুলিতে অডিটের কাজ চলছিল। হোমেরই বেশ কয়েক জন আবাসিকের সঙ্গে কথা বলার পরই তারা জানতে পারেন ধর্ষণের কথা, নারকীয় পরিস্থিতির কথা। বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। নড়েচড়ে বসে রাজ্য ও জেলা প্রশাসন। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যাঁদের মধ্যে কয়েক জন সরকারি আধিকারিকও রয়েছেন।
মুজফফরপুর শেলটার হোমে যৌন নিগ্রহের ঘটনায় প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জু ভার্মাকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হওয়ায় বিহার প্রশাসনকে তুলোধোনা করে সুপ্রিম কোর্ট। এ ঘটনায় আগামী ২৭ নভেম্বর রাজ্য পুলিশের ডিজিকে সশরীরে শীর্ষ আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন পাঠানো হয়। গত ৩১ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন মন্ত্রী মঞ্জু ভার্মা৷
Be the first to comment