বৃহস্পতিবার দুপুরে দেশের সর্বোচ্চ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিল, মসজিদ ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ নয়। নমাজ পড়ার জন্য অপরিহার্য নয় তা। এবং সর্বোচ্চ আদালতের এই রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই স্পষ্ট হয়ে গেল, সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যা মামলার শুনানি শুরু করতে আর কোনও বিলম্ব হওয়ার কথা নয়। অক্টোবর মাসের ২৯ তারিখ থেকেই তা শুরু হয়ে যেতে পারে।
উনিশের ভোটের আগে অযোধ্যা মামলার নিষ্পত্তির জন্য গেরুয়া শিবির সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে, সেই দেওয়াল লিখন ছিলই। কিন্তু আইনজ্ঞদের অনেকের মতে, সে ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা ছিল মসজিদ মামলা। ১৯৯৪ সালে যে মামলায় সুপ্রিম কোর্ট একবার রায় দিয়েছিল যে নমাজ পড়ার জন্য মসজিদ অপরিহার্য নয়। সেই রায় পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছিলেন মুসলিম ধর্মাবলম্বী কিছু মানুষ। আদালত তাঁদের দাবি এ দিন খারিজ করে দেয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা অবশ্য এ-ও জানান, এই মামলার সঙ্গে অযোধ্যা মামলার কিন্তু কোনও সম্পর্ক নেই।
তবে আইনজ্ঞরা বলছেন, তা নেই ঠিক। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট যদি মসজিদ মামলা পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিত তা হলে বিলম্বিত হতে পারত অযোধ্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের এ দিনের রায়ের পর ২৯ অক্টোবর থেকে অযোধ্যা মামলার শুনানি শুরু করতে আর কোনও বাধা রইল না।
সর্বোচ্চ আদালতের এ দিনের রায় শুনেই এ দিন উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে গেরুয়া শিবির, বিশেষ করে অযোধ্যার সাধু-সন্তরা। নির্মোহী আখড়ার প্রধান মহন্ত ধীরেন্দ্র দাস বলেন, “সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে আমরা খুশি। এ বার অযোধ্যা মামলার শুনানি তাড়াতাড়ি শুরু হোক এবং তার নিষ্পত্তি হোক। তা হলে আরও খুশি হব আমরা।”
প্রসঙ্গত, ১৬৬২ সালে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের নির্মাণ হয়েছিল। কিন্তু গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য, ওখানে রাম মন্দির ছিল। তা ভেঙে মসজিদ রয়েছে। মন্দিরে এখনও রোজ রামলালার মূর্তির পুজো হয়। এই যুক্তিতেই ১৯৯২ সালে লক্ষ লক্ষ করসেবক মিলে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে দেয়। ২০১০ সালে বাবরি মসজিদ মামলায় এলাহাবাদ আদালত খণ্ডপীঠ রায় দিয়েছিল, বিতর্কিত জমিটিকে তিন ভাগে ভাগ করতে হবে। তার একটি অংশ পাবে মুসলিমরা। একটি হিন্দুরা। যদিও বড় অংশ হিন্দুদেরই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দুই পক্ষই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল।
Be the first to comment