নির্ভয়াকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডের সাজা পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। ফলে দোষীদের ফাঁসির সাজা বহাল থাকল সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে। ২০১৭ সালে ফাঁসির সাজা হয় নির্ভয়া গণধর্ষণকাণ্ডে চার অভিযুক্তের। ২০১৮ সালের জুলাইতে সুপ্রিম কোর্ট তাদের ২০১৭ সালের রায়ের পূনর্মূল্যায়ণের আবেদন খারিজ করে দেয়। ২০১২ সালের ১৬ জিসেম্বর দিল্লির একটি চলন্ত বাসে নির্মমভাবে ধর্ষণ এবং ভয়াবহ যৌন নির্যাতন করে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয় ২৩ বছরের প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীকে। ১৩ দিনের লড়াই শেষে ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মৃত্যু হয় নির্যাতিতার।
এরপর ঘটনায় যুক্ত ছ’জন ধর্ষককে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। দেশজুড়ে আলোড়ন পড়ে যায়। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে অভিযুক্তদের মধ্যে পাঁচ জনের ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত। এক দুষ্কৃতী নাবালক হওয়ার কারণে দু’মাস জুভেনাইল হোমে বন্দি থাকার পরে মুক্তি পায়। বাকি পাঁচ জনের মধ্যে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত জেলের ভিতরে আত্মহত্যা করে।
রাষ্ট্রপতি সীলমোহর দিতেই ২০১২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দিল্লির গণধর্ষণকাণ্ডের দোষীদের ফাঁসির আদেশ কার্যকর করতে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে তিহার জেলে। চলে এসেছে ফাঁসির দড়ি। এর আগে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে নির্ভয়া গণধর্ষণকাণ্ডের অন্যতম এক দোষী সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে। সর্বোচ্চ আদালতে বিচারপতি আর ভানুমতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে বুধবারই তার শুনানি চলে। মঙ্গলবার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে নির্ভয়া মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামীর সাজা কমানোর আর্জি মামলা থেকে সরে দাঁড়ান প্রধান বিচারপতি বোবদে।
পরিবারের দারিদ্রতাকে হাতিয়ার করে এদিনের শুনানিতে সওয়াল করেন ধর্ষণ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামির আইনজীবী। সংবাদ মাধ্যম ও রাজনৈতিক চাপে তাঁর মক্কেলকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে বলে আদালতকে বলেন আবেনকারীর আইনজীবী। পাল্টা, আদালত বলে এই সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে আগেই শুনানিতে বিতর্ক হয়েছে।
দিল্লি সরকারের হয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সাজা কমানোর আবেদনের প্রবল প্রতিবাদ করেন। কোর্টে তিনি বলেন, কিছু অপরাধের ক্ষমা হয় না। ঈশ্বরও দোষীদের সৃষ্টিকর্তাভেবে লজ্জা বোধ করেন। তাই ফাঁসির সাজা কমানোর কোনও প্রশ্নই উঠতে পারে না। আদালত জানায় এ সংক্রান্ত বিষয়ে আগেই বিতর্ক হয়ে গিয়েছে।
Be the first to comment