চিরন্তন ব্যানার্জি:-
সুপ্রিমকোর্টে বৃহস্পতিবার সকালে আরজি কর কাণ্ডের শুনানি শুরু হতেই, চিকিৎসকদের অবিলম্বে কাজে ফেরার কথা বলে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের পর্যবেক্ষণ , ‘আমরা দেখব যাতে আপনাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয়। আপনারা কাজে যোগ দিন।’
পাশাপাশি প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বলেন, ‘চিকিৎসকরা কাজ না করলে চিকিৎসা ব্যবস্থা চলবে কী করে? যদি কোন অসুবিধা হয় তাহলে প্রথমে রিপোর্ট জমা করে আমাদের কাছে আসুন।’
অন্যদিকে, হাসপাতালের জুনিয়র আবাসিক ডাক্তারদের আইনজীবী গীতা লুথরা ডাক্তার ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিন বলেন, আমার মক্কেলরা এখনও আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তখন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, কারা ভয় দেখাচ্ছে? যে ডাক্তাররা এই ঘটনার প্রতিবাদে মুখ খুলেছেন, তাঁদের টার্গেট করা হতে পারে। এই আশঙ্কায় ভয় পাচ্ছেন তাঁরা।
প্রবীণ আইনজীবী এর জবাবে বলেন, আধিকারিকরা, গুন্ডাদের হামলার ভয় রয়েছে। লুখরা তাঁর সঙ্গে যুক্ত করেন হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্তারা ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন। হাসপাতালে আরও যারা থাকে তারাও হামলা করতে পারে। এর জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ঠিক আছে। আমি এটা নজরে রাখছি।
প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘চিকিৎসকদের আশ্বস্ত করুন। তাঁদের নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন রয়েছে। আমার পরিবারের এক সদস্য অসুস্থ থাকাকালীন আমি হাসপাতালের মেঝেতে শুয়েছিলাম। সেই সময় আমি চিকিৎসকদের অত্যন্ত কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাই। কোন পরিস্থিতির মধ্যে জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজ করতে হয়, তা দেখেছিলাম। চিকিৎসকরা ৩৬ ঘণ্টার উপর কাজ করেন।’ জুনিয়র চিকিৎসকদের এই দীর্ঘ ডিউটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আদালত।
এত কিছু পরেও প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও মনোজ মিশ্রর বেঞ্চ বলে, আপনারা কাজে ফিরুন। তা না হলে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পাবেন কী করে? আপনারা কাজে ফিরলে কর্তৃপক্ষ যাতে আপনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিতে পারে, তা আদালত দেখবে।
পাশাপাশি এদিন দেশের উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ, যদি ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদকারী ডাক্তার-পড়ুয়ারা কাজে যোগ না দেন, তাহলে তাঁদের অনুপস্থিত বলে গণ্য করা হবে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার বলে, তাঁরা প্রশাসনের কাছে উপস্থিত বলে দাবি জানাতে পারবেন না। একইসঙ্গে বেঞ্চ বলেছে, তবে তাঁরা যদি কাজে ফেরার কথা বলেন, তাহলে তাঁদের প্রতি নরম দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার করা হবে।
Be the first to comment