পেগাসাস ইস্যু অর্থাৎ ফোনে আড়ি পাতা কাণ্ডে বাংলার তৈরি তদন্ত কমিটির কাজে স্থগিতাদেশ দিল শীর্ষ আদালত। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। তাতেই জানানো হয়, সুপ্রিম কোর্টের তত্বাবধানে ইতিমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি পেগাসাস কেলেঙ্কারির তদন্ত করছে। এই অবস্থায় কোনও রাজ্যের পৃথক তদন্তের প্রয়োজন নেই বলেই মনে করছে দেশের শীর্ষ আদালত। আর তার জেরেই স্থগিতাদেশ দেওয়া হল। রাজ্যকে এই মর্মে নোটিসও পাঠানো হয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পেগাসাস রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই উত্তাল হয়ে ওঠে জাতীয় রাজনীতি। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করে, পেগাসাস নামের এই ইজরায়েলি সফটওয়্যার ব্যবহার করে দেশের প্রথম সারির রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, শিল্পপতি এমনকী সরকারি আমলাদের উপরও নজরদারি চালাচ্ছে কেন্দ্র।
এই কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই এ নিয়ে সরব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বছর একুশে জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশের মঞ্চ থেকে তিনি ঘোষণা করেন, ফোনে আড়ি পাতা কাণ্ডে আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করবে রাজ্য সরকার। গত ২৬ জুলাই এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মদন লোকুর এবং কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের ওই কমিটি সক্রিয়ভাবে কাজে নামে।
চলতি মাসের প্রথম দিকে তদন্তের স্বার্থে পেগাসাস আক্রান্তদের তালিকায় নাম থাকা ২১ জনকে তলব করেছিল তারা। কমিটির তরফে তলব করা হয়েছে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর, প্রাক্তন সিবিআই কর্তা তথা বিএসএফের ডিজি রাকেশ আস্তানার মতো প্রথম সারির ব্যক্তিত্বকে।
তবে সেসব কাজ আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন রাজ্যের হয়ে সওয়াল করেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ অভিষেক মনু সিংভি। তাঁর সওয়াল ছিল, যেহেতু একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে কমিটি তৈরি হয়েছে, কাজও শুরু হয়েছে, তাই তা চলুক – এই মর্মে আবেদন করেন। কিন্তু সেই আবেদন নাকচ করেন প্রধান বিচারপতি।
Be the first to comment