উচ্চ শিক্ষায় এবং সরকারি চাকরিতে আর্থিক ভাবে অনগ্রসরদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণকে বৈধ বলে ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার এমনই ঐতিহাসিক রায় দিল শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, অর্থনৈতিক মানদণ্ডের বিচারে এই সিদ্ধান্ত যে কোনও ভাবেই বৈষম্যমূলক নয়।এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিত, বিচারপতি দীনেশ মহেশ্বরী, বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাট, বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এবং বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালার সাংবিধানিক বেঞ্চ ৪:১ অনুপাতে এই রায় দিয়েছে। অর্থাৎ সাংবিধানিক বেঞ্চের ৫ বিচারপতি মধ্যে ৪ জনই এই সংরক্ষণের পক্ষে রায় দিয়েছেন। ১ জন বিচারপতি সংরক্ষণের বিরোধিতা করেছেন।
এই মামলার রায়দানের সময় শীর্ষ আদালতের বিচারপতি দীনেশ মহেশ্বরীর পর্যবেক্ষণ, ‘‘অর্থনৈতিক মানদণ্ডের নিরিখে ইডব্লিউএস সংরক্ষণ আইন কোনও ভাবেই (সংবিধানের) মূল কাঠামো অথবা সাম্যের নীতিকে লঙ্ঘন করে না।’’
প্রসঙ্গত, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া জাতির জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থার পক্ষে বরাবরই ছিল সঙ্ঘ পরিবার। সঙ্ঘের বর্তমান সরসঙ্ঘচালক মোহন ভগবত অতীতে বারবার এই প্রস্তাব দিয়েছেন। মূলত আরএসএসের চাপেই কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি সরকার সংবিধান সংশোধন করে অনগ্রসরদের জন্য উচ্চ শিক্ষা ও সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল।
সরকারের সেই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সর্বোচ্চ আদালত এদিন জানিয়ে দেয়, সমাজে পিছিয়ে পড়াদের ক্ষমতায়নের একটা মাধ্যম হল সংরক্ষণ ব্যবস্থা।আর্থিকভাবে দুর্বলদের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে তা সংবিধানের মূল কাঠামোয় কোনও ভাবে আঘাত করে না বা তা পরিপন্থী হতে পারে না। কারণ দেশের সংবিধান সমাজের কাউকে বাদ দিয়ে চলার কথা বলে না। সবাইকে নিয়ে চলার কথাই বলে। তা ছাড়া আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়াদের যেভাবে সংরক্ষণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তাতে ৫০ শতাংশের বেশি পদ সংরক্ষিত হবে না। সুতরাং এতে অসুবিধার কিছু নেই।
Be the first to comment