চিরন্তন ব্যানার্জি:-
আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় জোর ধাক্কা সন্দীপের। সন্দীপের করা আবেদন খারিজ করে দিল দেশের উচ্চ আদালত।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআইয়ের হাতে। ওই মামলায় হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় তাঁর বিরুদ্ধেও তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরই সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সন্দীপ। সেই মামলাই শুক্রবার খারিজ করে দিলেন সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হয়। মামলার আর্জি শুনেই তা খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “এটা নিয়ে কি কোনও বিতর্ক রয়েছে যে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা যখন ঘটে আপনিই ছিলেন হাসপাতালের অধ্যক্ষ?”
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ছাড়াও এদিনের শুনানিতে ছিলেন বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্র। প্রধানমন্ত্রী বিচারপতি বলেন, “আপনি একজন অভিযুক্ত। জনস্বার্থ মামলার ভিত্তিতে হাইকোর্ট যখন সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে, তখন আপনার আপত্তি করার কোনও এক্তিয়ারই নেই”
এদিন সন্দীপ ঘোষের হয়ে সওয়াল করেন তাঁর আইনজীবী মীনাক্ষী অরোরা। এদিন তিনি আদালতে বলেন, কলকাতা হাইকোর্ট রায় ঘোষণার সময়ে তাদের পর্যবেক্ষণে বলেছে যে, আরজি কর হাসপাতালের দুর্নীতির সঙ্গে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার যোগ থাকতে পারে। মীনাক্ষী বলেন, আমাদের আপত্তি এটা নিয়েই। আর্থিক অনিয়মের তদন্ত নিয়ে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু খুন ও ধর্ষণের ঘটনার তদন্তের সঙ্গে কেন তা জুড়ে দেওয়া হল।
তা শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, এত উতলা হওয়ার কী আছে? এটা নিয়ে তো কোনও বিতর্ক নেই যে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার সময়ে হাসপাতালে অধ্যক্ষ ছিলেন। সুতরাং তদন্তে আপত্তি কোথায়? ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার সঙ্গে আর্থিক অনিয়মের যোগ থাকবে বলে হাইকোর্ট তো একটা পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে। কোনও রায় তো দেয় নি। তদন্ত করেই দেখা যাক।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, হাসপাতালের বায়ো মেডিকেল ওয়েস্ট তথা বর্জ্য পাচার বা বিক্রির সঙ্গে খুন ও ধর্ষণের ঘটনার যোগ রয়েছে কিনা তা নিয়ে আপত্তি থাকার তো কথা নয়। এটা নিয়ে আপনি সুপ্রিম কোর্টে এসেছেন কেন?
এদিন সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী মীনাক্ষী অরোরা আখতার আলির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, আখতার আলিকে মুর্শিদাবাদে ট্রান্সফার করে দেওয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে তিনি সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগ করেছেন।
তা শুনে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, আখতার আলির কী উদ্দেশ্য রয়েছে তা এখানে বিচার্য বিষয় নয়। রাজ্য সরকার চাইলে আখতার আলির বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করতেই পারে। এখানে বিচার্য বিষয় হল, আর্থিক অনিয়ম হয়েছে কিনা। এবং তার সঙ্গে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার যোগ রয়েছে কিনা। এবং তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সে ব্যাপারে কোনও আপত্তি থাকা উচিত নয়।
Be the first to comment