বিজেপির সঙ্গে দীর্ঘ বছরের সম্পর্ক আগেই চুকিয়ে ফেলেছিলেন ৷ আর এবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন সুরজিৎ সাহা ৷ কিছুদিন আগে পর্যন্ত বিজেপির হাওড়া সদরের সভাপতি পদে ছিলেন তিনি ৷ বুধবার অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে ঘাসফুল শিবিরে যোগদান করেন সুরজিৎ ৷ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের ইচ্ছাতেই যে এই যোগদান, সেকথা জানিয়েছেন হাওড়া মধ্য তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায় ৷
এতদিন ধরে তৃণমূলের সমালোচনা করলেও ইদানীংকালে বিজেপি অন্দরেই সুরজিতের অবস্থান নিয়ে শুরু হয়েছিল জল্পনা ৷ তিনি যে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করতে চলেছে, তার একটা আভাস মিলতে শুরু করেছিল ৷ অবশেষে সেই জল্পনাই সত্যি হলো। কেন এই পদক্ষেপ করলেন বিজেপির দীর্ঘদিনের একনিষ্ঠ এই সৈনিক ? জবাবে সুরজিৎ তাঁর ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন ৷
সুরজিৎ জানান, তিনি বিজেপি করেছেন ২৮ বছর ধরে ৷ অথচ সদ্য যাঁরা গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন, তাঁদের একাংশ তাঁকেই দলের ভিতর কাজ করতে দিচ্ছিলেন না ৷ তাঁদের এই আচরণ তাঁর পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না বলেই জানিয়েছেন সুরজিৎ ৷ তিনি এক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারী, অমিতাভ চক্রবর্তী-সহ তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা নেতাদের কথাই বলতে চেয়েছেন ৷ সুরজিতের বক্তব্য, রাজ্যের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে আছেন ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় রাজ্যজুড়ে উন্নয়ন করছেন ৷ তাই মানুষের স্বার্থে, মানুষের সেবা করতে বিজেপি ছেড়ে তৃণমল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি ৷
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই হাওড়া পৌরনিগমের নির্বাচনী কমিটি তৈরি নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বিবাদে জড়ান সুরজিৎ সাহা। শুভেন্দুকে সারদার টাকা নিতে দেখা গিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি ৷ এরপরই তাঁকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করে দলীয় নেতৃত্ব ৷ পরবর্তীতে হাওড়া সদরে দলের নতুন আহ্বায়ক নিয়োগ করে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ৷ সুরজিৎ দল ছাড়ার পরই তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত হাওড়া সদরের বিজেপি সাধারণ সম্পাদক বিমল প্রসাদ দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন ৷ সম্প্রতি হাওড়া সদরের বিজেপি নেত্রী ইন্দু সিংও তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন ৷ আর এদিন সুরজিৎও সেই তৃণমূলেই নাম লেখালেন ৷
এই ঘটনায় কিছুটা হলেও চিন্তা বাড়ল বিজেপির ৷ ওয়াকিবহাল মহল অন্তত এমনটাই মনে করছে ৷ কারণ, যেভাবে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মী পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুল আপন করে নিচ্ছেন, সংগঠনে উপর তার বিরূপ প্রভাব পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে ৷
Be the first to comment