বাঘের আতঙ্ক বেশ থাবা গেড়েই বসেছে সিউড়িতে। আনাচ কানাচে কান পাতলেই শোনা যাবে বাঘ! বাঘ! তা বাঘ সত্যিই আছে কিনা জানা নেই, তবে ডোরাকাটা দক্ষিণ রায়ের নাম ঘুরছে সিউড়ির লোকের মুখে মুখে। আগে গরুঝোরাতে বাঘ উঁকি দিয়েছিল, এ বার নাকি বাঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে সিউড়ির আড্ডা গ্রামে।
কখনও জমিতে দেখা যাচ্ছে বাঘের পায়ের ছাপ, কখনও বাড়ি থেকে ছাগল-মুরগি টেনে নিয়ে যাচ্ছে বাঘ, আবার কখনও নাকি তাকে পুকুরের ধারে ঘাপটি মেরেও বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। এই বাঘ-বাঘ রবে রীতিমতো ঘুম উড়েছে বন দফতরের কর্মীদের। তাঁদের দাবি ওই এলাকায় বাঘ আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ। গ্রামবাসীরা যেটা দেখছেন বা যাকে বাঘ ঠাওরাচ্ছেন সেটা বাঘরোলও হতে পারে। তবে, বনকর্মীদের এই মত ধোপে টেকেনি। বাঘের দাবিতেই অটল রয়েছেন গ্রামবাসীরা।
দিন কয়েক আগে সিউড়ি থানার গরুঝোরাতে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে আতঙ্কিত হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। বহস্পতিবার রাতে, সিউড়ি থানারই আড্ডা গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা দাবি করেন পুকুরের ধারে বাঘের মতো দেখতে একটি প্রাণীকে বসে থাকতে দেখা গেছে। তারও গায়ে ছিল হলুদ-কালো ডোরাকাটা দাগ। অতএব সেটি বাঘ ছাড়া কিছু হতেই পারে না।
এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘গতকাল সন্ধেয় পুকুর পাড় থেকে কোনও প্রাণীর জল খাবার শব্দ শুনতে পাই। অমনি সবাই মিলে পুকুরের পাশের একটি বাড়ির ছাদে উঠে দেখি বাঘের মতো একটা প্রাণী পুকুর পাড় ধরে মাঠের মধ্যে চলে গেল।’’
গ্রামবাসীদের নানা অনুযোগ-অভিযোগের তাড়নায় শেষে বনকর্মীরা গরুঝোরা, আড্ডা-সহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামে তল্লাশি শুরু করেছেন। খাঁচা পেতে, টোপ দিয়ে বাঘ ধরার চেষ্টাও চলছে। গরুঝোরা থেকেই বাঘটি এ বার এলাকা বদল করে আড্ডা গ্রামে এসে আড্ডা জমিয়েছে বলে দাবি গ্রামবাসীদের।
বাঘ সত্যিই সিউড়িতে এসেছে কিনা সেটা এখনও পরিস্কার নয় বন কর্মীদের কাছে। কেউ বলছেন, ওই গ্রামগুলির ভৌগোলিক অবস্থান বিচার করলে বাঘ আসার সম্ভাবনা যে একেবারেই নেই তা বলা যায় না। আবার কারওর মত, বাঘ এইসব এলাকায় আসতেই পারেনা। যাই হোক, বাঘ থাক বা না থাক, বাঘের আতঙ্কে এখন রাতের ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীদের।
Be the first to comment