করোনা আবহে বড়বড় পুজো কমিটিগুলি এবার অনেকটাই পুজোর বহর কাটছাঁট করছে। প্রতিমা ছোট হচ্ছে, প্যান্ডেল ও আলোকসজ্জাতেও আগের জৌলুস কমছে। সুরুচি সংঘের পুজোও দক্ষিন কলকাতার এমন একটা পুজো যা শুরুর দিন থেকেই এত পুরস্কার পেয়েছে, যে উদ্যোক্তারা মেডেল, মানপত্র রাখার জায়গা পান না। অবশ্য শুধু পুরস্কার দিয়ে সুরুচির মুল্যায়ন না করে অর্থাৎ শুধু বিচারকদের চোখ দিয়ে সুরুচিকে বিচার না করে দর্শনার্থীদের দিক থেকে বিষয়টিকে দেখা উচিত। যখন সুরুচির পুজোয় ভিআইপি কার্ড দেওয়া হত তখনও ভিআইপি গেটে লাইন দিতে হতো। সেটা ভোর ৩টে হতে পারে অথবা বিকেল ৩টে। আর সন্ধ্যে থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পুজোর কটা দিন নিউ আলিপুর পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন সুরুচি সংঘে শুধুই কালো মাথার ভিড়। কেন উত্তর থেকে দক্ষিণ বা পূর্ব থেকে পশ্চিম লোক ভেঙে পড়েন তার কারন প্যান্ডেল, প্রতিমার অপূর্ব নান্দনিকতা ও বৈচিত্র দেখলেই বোঝা যায়।
শুধু কলকাতা বলে নয়, শহরতলি এমনকি গ্রাম-গ্রামান্তর থেকে মানুষ আসেন সুরুচির পুজো দেখার জন্য। থিম কী হবে সেই এক্সক্লুসিভ খবর জানা বা জানানোর জন্য সাংবাদিকদের মধ্যেও হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সুরুচির পুজো মানেই সু-রুচি, সুরুচি মানেই চমক, সুরুচি মানেই বৈচিত্র, সুরুচি মানেই ঐতিহ্য, সুরুচি মানেই আধুনিকতা।
পুজোর মূল উদ্যোক্তা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এই নিউ নর্মাল পরিস্থিতিতে পুজো কেমন হবে? করোনা কী হারিয়ে দেবে পুজো উদ্যোক্তাদের? প্রশ্ন রাখল রোজদিন.ইন রাজ্যের মন্ত্রী তথা পুজোর মূল উদ্যোক্তা অরূপ বিশ্বাসকে। অরূপবাবুর তাৎক্ষণিক জবাব “মায়ের পুজো মা-ই করাবেন”। তবে সচেতন মন্ত্রী একথা বলতে ভুললেন না যে যাই হোক না কেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেই আমরা সবকিছু করবো। মায়ের পুজো আমাদের কাছে যতটা গুরুত্বপূর্ণ, মানুষের জীবনের মূল্যও ততখানি। কিন্তু কীভাবে সামলাবেন কালো মাথার ভিড়? অরূপবাবুর বক্তব্য এত ভিড় এবারে হবে বলে মনে হয় না। সবাই স্বাস্থ্য সচেতন। আর যদি তা হয়ও সরকারি গাইডলাইন মেনে সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে আমরা যা করার করবো।
প্যান্ডেল, প্রতিমা কী ছোট হচ্ছে? একথার সরাসরি জবাব অরূপবাবু না দিলেও সূত্রের খবর এবারে ছোটখাটোর উপরেই নান্দনিকতা বজায় রেখে মায়ের পুজোর কথা ভাবছে সুরুচি সংঘ। অন্যান্য বছর এইসময় থিম বা থিম সং তৈরি নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও এবারের পরিস্থিতি আলাদা। তাই পুজো সম্পর্কে বিশদে জানতে গেলে আরও ১০ দিন অপেক্ষা করতে হবে, বলেন অরূপবাবু। মোটের উপর একথা বলাই যায় সুরুচির পুজোয় বজায় থাকবে রুচি, থাকবে না বাহুল্য।
Be the first to comment