CPI(M)-এর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সম্পাদকমণ্ডলী থেকে আগেই বাদ পড়েছিলেন তিনি। দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য এবার সাসপেন্ড করা হল রাজ্যের প্রাক্তন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুশান্ত ঘোষকে।
আপাতত তিন মাস দলের কোনও বিষয়ে তিনি থাকতে পারবেন না । দল তাঁকে সাসপেন্ড করল । তাহলে কি তিনি এবার অন্য শিবিরে নাম লেখাবেন ? তাঁর উত্তর, দল তাঁকে বসিয়ে দিয়েছে বা তিনি অন্য দলে যোগ দেবেন এমনটা নয়। তবে তাঁর অভিযোগ, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনায় তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
সদ্য শেষ হওয়া পার্টির রাজ্য কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, রাজ্যসভার সদস্য বিকাশ ভট্টাচার্যকে আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে রাজ্য কমিটিভুক্ত করার। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর সভাপতিত্বে পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে রাজ্য কমিটির বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে পার্টির কর্মসূচি পর্যালোচনা করা হয় বৈঠকে। CPI(M)-এর রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জানান, সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে এই দুঃসময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন পার্টি ও গণ সংগঠনের কর্মীরা। পার্টির কর্ম তৎপরতা বেড়েছে । একইসঙ্গে পার্টিকে সাংগঠনিকভাবে আরও সংহত করার কাজে গুরুত্ব দিতে হবে । বুথভিত্তিক সংগঠনকে প্রস্তুত করতে হবে। এখন থেকেই নির্বাচনের জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করতে হবে।
সূর্যকান্ত মিশ্র আরও বলেন, “পার্টির স্বাধীন উদ্যোগ, বামপন্থীদের সঙ্গে যৌথ কর্মসূচি এবং রাজ্যে তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে সমবেত করেই আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করতে হবে। রাজ্যে বিশেষ করে খাদ্য ও কাজের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার জমি তৈরি হচ্ছে।
সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণের কাছে সঠিক তথ্য ও প্রচার পৌঁছে দেওয়ার কাজে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। এদিকে বৈঠকে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “আত্মনির্ভর ভারতের নামে আত্মসমর্পণের ভারত তৈরি করা হচ্ছে।
রাজ্য কমিটির এই বৈঠকে সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে গঠিত হওয়া তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেশ করা হয় । সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, সুশান্ত ঘোষকে সাসপেন্ড করা হয়। সমগ্র ঘটনার জন্য ইতিমধ্যে সুশান্ত ঘোষ ক্ষমা চেয়েছেন। শৃঙ্খলা-ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। দলীয় স্তরে কমিশন করা হয় অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য। গুরুতর শৃঙ্খলা-ভঙ্গের অভিযোগ ওঠে সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে। তিনি ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন তাই তাঁকে বহিষ্কার করা হয়নি। তাঁকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। দলের এক শীর্ষ নেতৃত্বের কথায়, সুযোগ দেওয়ার জন্যই বহিষ্কার না করে সুশান্ত ঘোষকে সাসপেন্ড করা হল।
সাসপেন্ড হওয়ার পর সুশান্ত ঘোষ জানিয়েছেন, তিনি পার্টির সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়েছেন। ভবিষ্যতে পার্টির সম্পর্কে কথা বলার আগে তিনি সতর্ক থাকবেন। আগামীদিনেও তিনি একনিষ্ঠভাবে CPI(M)-এর হয়েই কাজ করবেন।
Be the first to comment