তপন কান্দুর মৃত্যুর একমাস পর নিহতের বাড়িতে শুভেন্দু অধিকারী

Spread the love

“তৃণমূলকে ঝালদা পুরবোর্ড পাইয়ে দিতে পুলিশ এই ঘৃণ্য কাজ করেছে”, পুরুলিয়ায় ঝালদা পুর বোর্ড গঠনের আগে খুন হওয়া কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর বাড়িতে গিয়ে রবিবার এভাবেই পুলিশকে আক্রমণ করলেন বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষকে কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। এদিন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তথা মৃত নিরঞ্জন বৈষ্ণবের বাড়িতেও যান শুভেন্দু। সেখানে গিয়ে তার বউদি পবিতা বৈষ্ণবের সঙ্গেও কথা বলেন।

রবিবার বিকেলে পুরুলিয়া শহর হয়ে ঝালদায় পা রাখেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ তথা দলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, পুরুলিয়ার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়, জয়পুরের বিধায়ক নরহরি মাহাতো, দলের জেলা সভাপতি বিবেক রাঙ্গা ও দলীয় নেতা বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী প্রমুখ। ঝালদা শহরের নামোপাড়া এলাকা থেকে এদিন তিনি প্রতিবাদ মিছিলে পা মেলান। স্টেশন যাওয়ার রাস্তায় জমায়েত করে বিজেপি। সেই জমায়েত স্থল থেকে শাসকদল তৃণমূল থেকে পুলিশকে আক্রমণ করেন শুভেন্দু। তারপর যান নিহত তপন কান্দুর বাড়িতে।

এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে আমি বেশি কিছু বলব না। হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে সিবিআই তদন্ত চলছে। শুধু এটুকু বলব তৃণমূলকে ঝালদা পুরবোর্ড পাইয়ে দিতে পুলিশ এই ঘৃণ্য কাজ করেছে। পূর্ণিমা কান্দু বলেছেন, “আইসি এই ঘটনার কালপ্রিট। আগে তপন কান্দুর হাত ভেঙে দিয়েছিলেন। সেই সময় তপন কান্দু বিজেপিতে ছিলেন। ওনার কোনও শত্রু নেই। তাঁকে খুন করায় ঝালদার মানুষ রং পর্যন্ত খেলেনিl” এদিন ওই দু’জনের বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানিয়ে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন বিরোধী দলনেতা। মৃত নিরঞ্জন বৈষ্ণবের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যও করেন তিনি। এদিন আলাদাভাবে নিহতের স্ত্রী পূর্ণিমা দেবী ছাড়াও তার ভাইপো মিঠুন কান্দুর সঙ্গে কথা বলেন শুভেন্দু।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ-সাংসদ, বিধায়করা বাড়ি যাওয়ায় খুশি পূর্ণিমা কান্দু। তাঁর কথায়, “আমি দাদাকে বলেছি আমার কোনও আর্থিক সাহায্য লাগবে না। দোষীরা যাতে উপযুক্ত সাজা পায় তা আপনাকে সুনিশ্চিত করতে হবে। উনি আমাকে সেই কথা দিয়ে গিয়েছেন। ফোন নম্বর দিয়েছেন। তাই আমি খুশি। আজ খানিকটা ভাল লাগছে।” এদিন শুভেন্দু অধিকারীর সামনেই ঝালদা থানার আইসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন পূর্ণিমা দেবী। তিনি বলেন, “আমার স্বামী ২০১৮ সালে যখন বিজেপিতে যোগদান করেছিল তখন এই আইসি হাত ভেঙে দিয়েছিল। অনেক অত্যাচার করেছে। এইসব কথা আমি বিরোধী দলনেতাকে বলেছি।”

এদিকে রবিবার তপন কান্দু হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত সিবিআই-র হেফাজতে থাকা নরেন কান্দু আসিক খান, সত্যবান প্রামাণিককে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাদেরকে ১০ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠান। সংশোধনাগার যাওয়ার পথে পুরুলিয়া আদালত চত্বরে প্রিজন ভ্যান থেকে ধৃত তৃণমূল নেতা সত্যবান প্রামানিক বলেন, “এই ঘটনাই বড় মাথা আছে ।” ধৃত সত্যবানের এমন কথায় তোলপাড় ঝালদা পুরশহর। ওই প্রিজনভ্যান থেকেই নরেন কান্দু বলেন, “পুলিশ হেফাজতে রেখে আইসি আমাদেরকে মারধর করেছিল।” এদিন সিবিআই-র সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবরেটরির ক্রাইম সিন টিম-র ছয় সদস্য দু’দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*