চার বিজেপি বিধায়ক। তন্ময় ঘোষ। সৌমেন রায়। বিশ্বজিৎ দাস। কৃষ্ণ কল্যাণী। এই চার বিধায়কই তৃণমূলে যোগদান করলেও, বিধানসভার খাতায় তাঁদের নাম এখনও বিজেপি বিধায়ক হিসেবেই নথিভুক্ত রয়েছে। বুধবার যখন শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে ভাষণ রাখতে ওঠেন, এই চার বিধায়ক বিজেপির দিকের আসনেই বসেছিলেন এবং সেখান থেকেই শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির বিরুদ্ধাচারণ করছিলেন। ঘটনায় বিজেপির অন্যান্য বিধায়করা তখন বিরক্ত হয়ে এই চার বিধায়ককে বার বার ইঙ্গিত করতে থাকেন, তৃণমূলের দিকে গিয়ে বসার জন্য। এই নিয়ে বিধানসভার ভিতরেই এক বাদানুবাদের পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ শুরু হওয়ার পর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি পরিষদীয় দলের নেতারা ওয়াক আউট করে বেরিয়ে যান।
কিন্তু বিজেপি বিধায়করা ওয়াক আউট করলেও কৃষ্ণ কল্যাণী ,বিশ্বজিৎ দাস সহ চার জন বিধায়ক, যাঁরা এখনও খাতায় কলমে বিজেপির বিধায়ক, তাঁরা নিজেদের আসনে বসে আছেন। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ শেষ হয়ে যাওয়ার পর কৃষ্ণ কল্যাণী ও অন্যান্য বিজেপি বিধায়করা মুখ্যমন্ত্রীর আসনের কাছে আসেন এবং মুখ্যমন্ত্রীকে কিছু একটা বলেন। এরপরই দেখা যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় উঠে দাঁড়িয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং বলেন,কৃষ্ণ কল্যাণী একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ করছেন। এটি যেন শোনা হয়, সেই অনুরোধও করেন। পার্থর অনুরোধের পর অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সময় দেন কৃষ্ণ কল্যাণীকে। তারপর বিজেপি বিধায়ক উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, “ওয়াক আউট করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় শুভেন্দু অধিকারী আমাকে বলেছেন – কত সাহস দেখে নেব। তোমরা বিরুদ্ধে আয়করকে লাগিয়ে দেব। আমি নতুন জিতে এসেছি। বিধানসভার কাজকর্ম শিখতে চাই। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, তাই আমি বসে ছিলাম।”
সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উঠে দাঁড়িয়ে অধ্যক্ষকে বলেন, “তাহলেই লক্ষ্য করুন, ইডি, সিবিআই, আয়কর কারা নিয়ন্ত্রণ করে। এই অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তাহলে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে স্বাধীকার ভঙ্গের নোটিস আনা উচিত।” সূত্রের খবর, পরবর্তী সময়ে শুভেন্দু অধিকারী তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, “আমি কোথায় বলেছি? আমি বলেছি এমন কি কোনও রেকর্ড আছে? ” তবে এই চার বিধায়ক কিন্তু নিজেদের দাবি থেকে সরে আসেননি। তাঁরা কিন্তু নিজেদের অভিযোগে অনঢ়। উল্লেখ্য, বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন এই ধরনের ঘটনা অভূতপূর্ব। এদিকে চার বিজেপি বিধায়ককেকে তাঁর ভাষণ শোনার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Be the first to comment