ফের বিপাকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার তাঁকে ‘শোকজ’ করল শিশু সুরক্ষা কমিশন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলের জন্মদিন নিয়ে অপপ্রচার করার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। শুধু শোকজ নোটিস পাঠানোই নয়, রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন বিষয়টিকে নিয়ে আরও কড়া অবস্থান স্পষ্ট করেছে। বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে তিনদিনের মধ্যে ক্ষমা চাইতে হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি টুইট ডিলিট করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। শোকজ নোটিসে সাড়া না দিলে আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী।
একটি পাঁচতারা হোটেলের অনুষ্ঠানের আয়োজন ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে একটি টুইট করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর নিশানায় ছিল অভিষেকের ছেলের জন্মদিন। সেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার জন্য ৫০০-র বেশি পুলিশকর্মীকে মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও মোতায়েন করা হয়েছে বম্ব স্কোয়াড, ডগ স্কোয়াড ইত্যাদি। এই ঘটনা রবিবারের, এরই মাঝে বুধবার বেলেঘাটা থানায় এই বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়।
পাশাপাশি শিল্পা দাস নামে এক মহিলা অভিযোগ দায়ের করেন শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনে। তিনি বলেন ৩ বছরের শিশুকে নিয়ে অপপ্রচার চলছে। প্রসঙ্গত, শুভেন্দু যে অনুষ্ঠানকে অভিষেকের ছেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠান বলে অপপ্রচার করেছেন সেটি আসলে ডায়মন্ড হারবার এফসি -এর সাফল্যের উদযাপন ছিল। ফুটবল ক্লাবের অনুষ্ঠানকে অভিষেকের ‘ছেলের জন্মদিনের পার্টি’ বলে দাবি করে যে বিভ্রান্তিকর টুইট রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী করেছেন, তা আসলে রাজনৈতিক রঙ লাগাবার অপচেষ্টা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
শুভেন্দুর দাবি যে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, তা অভিষেকের ফেসবুক পোস্টে নজর রাখলেই স্পষ্ট। অনুষ্ঠান শেষে ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার পেলের কথা উল্লেখ করে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে শুভেচ্ছা জানান। তার সঙ্গে অনুষ্ঠানের বেশ কয়েকটি ছবিও শেয়ার করেন। ওই পাঁচতারা হোটেলে অভিষেক যে কোনও পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশ নেননি, ওই ছবিগুলিই যেন তার প্রমাণ। শুধুমাত্র রাজনৈতিক আক্রোশ থেকে এভাবে ৩ বছরের শিশুকে নিয়ে অপপ্রচারকে মোটেই ভাল চোখে দেখে নি শিশু সুরক্ষা কমিশন। শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তাঁরা চিঠি এবং টুইট পড়ে দেখেছেন এবং অত্যন্ত কুরুচিকর বলেই মত কমিশনের। রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়। সেখানে একটি বাচ্চাকে নিয়ে এমন মন্তব্য কখনই মেনে নেওয়া যায় না। অনন্যা বলছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের শিশু অধিকার সুরক্ষা বিভাগের সদস্য ভারতও। তার নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে ওই ট্যুইটে। ভারতীয় দণ্ডবিধির কিছু ধারাও লঙ্ঘিত হয়েছে।
শুভেন্দু বলছেন তিনি কারোর নাম উল্লেখ করেন নি। তবে তাঁর আক্রমণের টার্গেট যে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তা আর বোঝার অপেক্ষা রাখে না বলছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। রাজনীতিতে পেরে উঠতে না পেরে শুভেন্দু যেভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে শুরু করেছেন সেখানে ৩ বছরের শিশুকেও বাদ না দিয়ে কার্যত নিজের দলের দৈন্যতাই স্পষ্ট করছেন তিনি, এমনটাই মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা।
Be the first to comment