বুধবার রাতে হেপট্যাথলনে জাকার্তার মাটিতে এশিয়ান গেমসে ভারতের জাতীয় পতাকা ওড়ানোর পরের দিনেই ফোন গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর তরফে। ঠিক দু’দিন পরেই এ বার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে এল শুভেচ্ছা। সেই সঙ্গে মিলল রাজ্যের তুলনায় তিন গুণ আর্থিক পুরস্কারের আশ্বাসও।
শনিবার বেলা পৌনে ১২ টা নাগাদ জলপাইগুড়ির পাতাকাটার ঘোষপাড়ায় স্বপ্না বর্মনের বাড়িতে যান দার্জিলিংয়ের সাংসদ সুরেন্দ্রজিৎ সিং আলুওয়ালিয়া। সেখানে গিয়ে স্বপ্নার মা-বাবা ও পরিবারের অন্যান্য লোকেদের শুভেচ্ছা জানান তিনি। স্বপ্নার বাড়িতে বসেই কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোরের সঙ্গে ফোনে স্বপ্নার মায়ের কথা বলিয়ে দেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ। রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর স্বপ্নার এই সাফল্যের জন্য শুভেচ্ছা জানান তাঁর মা’কে।
শুধু তাই নয়, জাকার্তায় যে রেকর্ড স্বপ্না গড়েছেন, তার স্বীকৃতি স্বরূপ ৩০ লক্ষ টাকা পুরস্কারের কথা ঘোষণা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে। সেই সঙ্গে এস এস আলুওয়ালিয়া এও জানান, ভারতীয় দল ৫ সেপ্টেম্বর জাকার্তা থেকে দিল্লির মাটিতে পা দেওয়ার পর সোনাজয়ী খেলোয়াড়দের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালেই স্বপ্নার মা বাসনা বর্মনকে ফোন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের তরফে ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হবে স্বপ্নাকে। দেওয়া হবে সরকারি চাকরিও। তবে, কবে স্বপ্নাকে সরকারের তরফে সংবর্ধনা দেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন। থাকবেন দু’দিন। এরমধ্যে স্বপ্না ফিরে এলে দার্জিলিংয়ে সংবর্ধিত করা হবে তাঁকে।
১৬ বছর পর স্বপ্নার হাত ধরে বাংলার কোনও অ্যাথলিট সোনা জিতল এশিয়াডে। ২০০২ সালে বুসান এশিয়াডে শেষবার সোনা জিতেছিলেন সরস্বতী দে। তার আগে ব্যাঙ্কক এশিয়াডে জোড়া সোনা জিতেছিলেন জ্যোতির্ময়ী শিকদার। তারপরেই অ্যাথেলেটিক্সের সবথেকে কঠিন ইভেন্টে সোনা জয় করল বাংলার এই সোনার মেয়ে।
ক্রীড়া মহলের সঙ্গে জড়িত অনেকের মতে, স্বপ্নাকে পুরস্কার তথা স্বীকৃতি দেওয়া ইতিবাচক। কিন্তু সোনা জেতার পর পুরস্কারের তুলনায়, স্বপ্নাদের বেড়ে ওঠার সময় সাহায্য বেশি প্রয়োজন। তাঁদের প্রশিক্ষণ, শারীরিক পুষ্টি এবং ক্রীড়া পরিকাঠামোর জন্য। দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে স্বপ্না সোনা জিতেছেন, তাই তাঁদের এই লড়াইয়ের পথে দারিদ্র্য যেন আর বাধা না হয়ে উঠতে পারে সেটা দেখার দায়িত্ব সরকারের। এই ধরণের সাহায্যের ফলে স্বপ্নার মতো মেয়েরা ভবিষ্যতে ক্রীড়া জগতে ভারতের নাম আরও উঁচুতে তুলবে বলেই বিশ্বাস ক্রীড়া মহলের একটা বড় অংশের।
Be the first to comment