শেষযাত্রায় তাপস পাল। বুধবার সকালে গল্ফগ্রিনের বাড়ি থেকে মরদেহ প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় টেকনিশিয়ান স্টুডিয়োতে। তারপর রবীন্দ্রসদনে শায়িত রাখা হয় তাপস পালের মরদেহ। সেখানে শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ কয়েকজন তৃণমূল নেতা। উপস্থিত ছিলেন টলিউডের কলা-কুশলীরা। এরপর সেখান থেকে কেওড়াতলা শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয় দেহ। সেখানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। গান স্যালুটে শেষ বিদায় জানালো হয় সাহেবকে। কেওড়াতলা মহাশ্মশানে পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন হল প্রিয় অভিনেতার শেষকৃত্য।
মঙ্গলবার রাত প্রায় ৯টা নাগাদ মুম্বই থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছয় তাপস পালের কফিনবন্দি দেহ। বিমানে ছিলেন তাঁর স্ত্রী নন্দিনী পাল। তাপস পালকে শ্রদ্ধা জানাতে বিমানবন্দরে এসেছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। প্রিয় অভিনেতাকে শেষবার দেখতে কলকাতা বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় জমেছিল অনুরাগীদের।
মঙ্গলবার ভোররাত ৩টে ৫১ মিনিটে মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। জানা গিয়েছে, ২৮ জানুয়ারি মুম্বইতে মেয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন। ফেরার কথা ছিল ২ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু ২৮ জানুয়ারির দিনই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন। তারপর হাসপাতালে ভর্তি হন। সেই থেকে হাসপাতালেই ছিলেন। পরে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় তাঁকে। ৬ ফেব্রুয়ারি ভেন্টিলেশন থেকে বের করা হয় তাপস পালকে। শেষমেশ মঙ্গলবার ভোররাতেই থেমে যায় কেদারের লড়াই।
তরুণ মজুমদারের হাত ধরে দাদার কীর্তি দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে পথচলা শুরু। প্রথম সিনেমাতেই তাঁর অভিনয় দর্শকের মন জয় করেছিল। তারপর সাহেব, ভালোবাসা ভালোবাসা, গুরুদক্ষিণা, মঙ্গলদীপ একের পর এক সুপারহিট ছবি উপহার দিয়েছেন বাঙালি দর্শককে। সাহেব ছবির জন্য ১৯৮১ সালে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার। ১৯৮৪ সালে হীরেন নাগের সিনেমা ‘অবোধে’র হাত ধরে বলিউডে অভিষেক। বিপরীতে ছিলেন মাধুরী দীক্ষিত।
২০০১ সালে রাজনীতিতে পদার্পণ তাপস পালের। ২০০১-২০০৬ ও ২০০৬-২০০৯, দু’দফায় আলিপুর বিধানসভা থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। কৃষ্ণনগর থেকে দু’বারের তৃণমূল সাংসদ ছিলেন। কৃষ্ণনগরে দ্বিতীয় দফায় সাংসদ হওয়ার পর একাধিক বার বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। ধীরে ধীরে দলের সঙ্গেও দূরত্ব বাড়তে থাকে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে রোজভ্যালিকাণ্ডে গ্রেপ্তার হন তাপস। ১৩ মাস পর ছাড়া পেয়ে আর সেভাবে তাঁকে দলের কাজে দেখা যায়নি। দু-একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি করেছিলেন। আর সেলুলয়েডেও সেভাবে দেখা যায়নি তাঁকে।
Be the first to comment