অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের পাশে দাঁড়িয়ে পুরুলিয়ার সভা থেকে বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায়কে একহাত নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, ক্ষমতা থাকলে সায়নীর গায়ে হাত দিয়ে দেখাক বিজেপি। এরপরই মমতাকে পালটা খোঁচা দিলেন তথাগত রায়। সায়নী কীভাবে এককালে এই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই প্রকাশ্য সরব হয়েছিলেন, তার একটি পুরনো ভিডিও পোস্ট করলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল। এদিকে সায়নীও নতুন পোস্টে ব্যঙ্গাত্বকভাবেই খোঁচা দিলেন গেরুয়া শিবিরকে।
মঙ্গলবার পুরুলিয়ার জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানান, সংস্কৃতিকে, টালিগঞ্জকে এবং বাংলাকে আক্রমণ করা যাবে না। বাক স্বাধীনতা আছে, মানুষ কথা বলতেই পারেন”। তিনি বলেন, সায়নীর মতো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একটা বাচ্চা মেয়েকে ধমক-চমক দিচ্ছে। আজকে সকালেও শুনেছি, যে ওঁকে নাকি বিজেপি থেকে ধমকানো হচ্ছে। এত বড় স্পর্ধা? বিজেপি তুমি দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, বিহারে ধমকাও। বাংলার কাউকে ধমকানোর সাহস পাও কোথা থেকে? বাংলায় ধমকালে মুখ লিউকোপ্লাস্টার দিয়ে বন্ধ করে দেবে মানুষ। এত সোজা নয়। ক্ষমতা থাকে তো সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষদের গায়ে হাত দিয়ে দেখাও। বয়স হলেও ভীমরতি যায় না। নাতনির বয়সি মেয়েকে প্রতিদিন হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তাঁর স্বাধীনভাবে ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশের অধিকার নিশ্চয়ই আছে।
বুধবার সকালে একটি পুরনো ভিডিও পোস্ট করে বিতর্কে উস্কে দিলেন বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায়। সেখানে দেখা যায়, কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবজুড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্টারের বিরুদ্ধে সোচ্চার সায়নী। সঙ্গে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘এক সায়নীর পাশে মমতা! আহা, দেখে বড় ভাল লাগল! আর এই দেখুন মমতার পাশে কে?’ এই ভিডিও পোস্ট করে এক ঢিলে যেন দুই পাখি শিকার করারই চেষ্টা করলেন তথাগত রায়। মমতা ও সায়নী উভয়কেই খোঁচা দিলেন তিনি। এরপর সায়নীও একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, “যাকে ভালবাসো তাকে যেতে দাও। ৯১.০৭ টাকা লিটারে কতদূরই বা তারা যেতে পারবে।” এভাবেই বিজেপিকে নাম না করে কটাক্ষ করেন তিনি।
শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নন, সোমবার তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারও সায়নী ঘোষকে বিজেপির আক্রমণের কড়া নিন্দা করেন। টুইটে কাকলি লেখেন, ”জঘন্য !! লজ্জাজনক, বিজেপি যুব মোর্চার নির্দেশে কোনও নির্দিষ্ট বিভাগের সদস্যরা একজন বাঙালি অভিনেত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা করি। আমরা সায়নী ঘোষের সঙ্গে রয়েছি।”
সম্প্রতি একটি বৈদ্যুতিন বাংলা সংবাদমাধ্যমে সায়নী ঘোষ ও তথাগত রায়ের বাগযুদ্ধ চরমে ওঠে৷ তারপরই প্রকাশ্যে আসে ২০১৫ সালে সায়নীর করা একটি টুইট। সেই টুইট শিবলিঙ্গে কন্ডোম পরাতে দেখা যাচ্ছে এক মহিলাকে। ওই ছবিতে তাঁর ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে বলে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫এ ধারায় সায়নীর বিরুদ্ধে কলকাতার রবীন্দ্র সরোবর থানায় অভিযোগ জানান বিজেপি নেতা তথাগত রায়।
Be the first to comment