ব্রততী ঘোষ
চা বা কফি নিয়ে অনেক কথাই বলা হয়ে থাকে, কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক সেসব নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। প্রিয় পানিয় এবং সব ধরনের আড্ডায় থাকার পরও চায়ের রয়েছে নানা বদনাম। যেমন- ঘুমের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, হজমের গোলামাল ইত্যাদি। সত্যিই কি তাই? নাকি গলদ অন্য কোথাও। ভারতীয় পুষ্টিবিদ রুজুতা দিউয়াকার বলছেন অন্য কথা। ওজন কমানোর জন্য বেছে নেওয়া বেশিরভাগ খাদ্যাভ্যাস থেকেই বাদ পড়ে যায় চা-কফি। যার কারণ হল এতে আছে চিনি, দুধ এবং ক্যাফেইন। তবে রাজুতা দিউয়াকার জানাচ্ছেন, চা কফি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং তা আবার চিনিসহ। মনে রাখতে হবে শুধু পরিমাণ মেনে চলা। আর এজন্য বিধি-নিষেধটাও দিয়েছেন পুষ্টিবিদ রুজুতা দিউয়াকার-
কখন চা কফি খাওয়া যাবে না
সকালে ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে চা-কফি কোনোটাই পান করা উচিত নয়। আবার রাতে ঘুমানোর আগে গলা দিয়ে নামা শেষ ভোজ্য বস্তুটাও চা-কফি হওয়া যাবে না। ওজন কমানোর জন্য একবেলার খাবার না খেয়ে তার বদলে চা কিংবা কফি পান করাটাও ভুল।
দিনে কতটকু পান করা যাবে?
সারাদিনে দুতিন কাপ চা কিংবা কফি পান করতে পারেন নির্দিধায়।
মসলা চা কি স্বাস্থ্যকর?
দুধ এবং মসলা দেওয়া চা বর্তমানে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর পানীয়ের আখ্যা পেয়েছে। তাই স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারে এর অবশ্যই অবদান রয়েছে।
চিনিসহ না কি ছাড়া?
অবশ্যই চিনিসহ। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন এবং অন্যান্য ডায়বেটিস সংস্থাগুলোর মতে, সুস্থ মানুষের জন্য দিনে ছয় থেকে নয় টেবিল-চামচ চিনি ক্ষতিকর নয়। প্যাকেটজাত কিংবা প্রক্রিয়াজাত খাবারে লুকিয়ে থাকা অস্বাস্থ্যকর চিনি এড়িয়ে যাওয়া ভাল। তাই খুশি মনে চা কফি পান করুন, তবে পরিমাণ মতো।
চা কফির অসংখ্য গুণের মাঝে কিছু দোষও রয়েছে। ক্ষতিকর দিকগুলো হল
– অতিরিক্ত চা পানের কারণে অনিদ্রা দেখা দিতে পারে।
– চায়ে থাকা ক্যাফেইন অল্প মাত্রায় মূত্রবর্থক হিসেবে কাজ করে। বেশি চা পান করলে ঘন ঘন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হতে পারে।
– সকালের চা ‘বড়’ কাজ সারতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত হলে হিতে বিপরীত। চায়ে থাকা থিওফাইলিন নামক রাসায়নিক উপাদান হজমের সময় জল-শূন্যতা তৈরি করতে পারে, যার ফলাফল কোষ্ঠকাঠিন্য।
– ক্যাফেইন মেজাজ উৎফুল্লকারী উপাদান, শরীরের উপর যার ভাল-খারাপ দুটি প্রভাবই রয়েছে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন ঘুমের সমস্যা, অস্থিরতা, অস্বস্তি ও হৃদস্পন্দসন বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী।
– গর্ভবতী মায়েদের চা এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ চায়ের ক্যাফেইন ভ্রুণের বৃদ্ধি ব্যাহত করে এবং গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
– প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি হল অতিরিক্ত চা। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরুষ প্রচুর চা পান করেন তাদের এই ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি স্বাভাবিক চা পানকারীদের তুলনায় বেশি।
– ক্যাফেইন হৃদযন্ত্রের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান। তাই যারা হৃদরোগে আক্রান্ত কিংবা সেরে উঠেছেন তাদের চা যথাসম্ভব কম পান করাই শ্রেয়।
Be the first to comment